মোঃ মিলন হোসেন
বিশ্বব্যাপী করোনার মহামারী মধ্যেই দেশে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী এরই মধ্যে দেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা বন্যাকবলিত। দিন দিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতির ফলে দেশের অনেক জেলা বন্যায় কবলিত, পানিবন্দি লাখো মানুষ। বন্যাদুর্গত এলাকার রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ, ঘরবাড়িসহ তলিয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। অধিকাংশ স্থানে বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন রোগব্যাধিতে ভুগছে অনেকেই। দেশের বিভিন্ন স্থানে পানিতে ডুবে ও সাপে কেটে মারা গেছেন প্রায় বহু মানুষ।
বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গত প্রায় চার মাস ধরে দেশে ‘লকডাউন’ চলায় অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। ইতিমধ্যে মানুষের আয় কমে গেছে। অনেকে তিন বেলা খাবার পাচ্ছেন না। সহায় সম্ভল হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে লাখো মানুষ। বিভিন্ন স্থানে সরকারি ত্রাণ সহায়তা আসলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অল্প। তাছাড়া সুষ্ঠু বন্টনের অভাবে ত্রাণ পাচ্ছেন না অনেক মানুষ।
অপরদিকে কুরবানির ঈদ সামনে রেখে লালন-পালন করা গবাদিপশু নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই খামারী এবং সাধারণ পশু পালনকারীদের। বন্যায় পশুর হাটসহ রাস্তা-ঘাট ডুবে যাওয়ায় পশু বিক্রি ও নায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কায় রয়েছেন তারা। দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগও বাড়ছে। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ১৯৮৮ সালের পর এবারের বন্যা সবচেয়ে দীর্ঘ হবে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উৎকণ্ঠা জানিয়ে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রসের এশিয়া কার্যালয় থেকে গত বুধবার এক বিবৃতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, বন্যায় বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এই অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ৯৬ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে উল্লেখ করেছে সংস্থাটটি।
লেখকঃ শিক্ষার্থী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।