আনিসুল ইসলাম, কাপাসিয়া (গাজীপুর) :
পেঁয়াজের সংকট ও মুল্যবৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণার একদিন না যেতেই কাপাসিয়ায় ৩৭ টাকা দরের পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলা সদরের প্রধান বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
এদিকে, কাপাসিয়া বাজারে বেশী দামে পেঁয়াজ বিক্রির দায়ে দুই আড়তদার ও ৪ খুচরা বিক্রেতাকে ১৬ হাজার টাকা অর্থদন্ড করেছে কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ক্রেতাদের অভিযোগ, আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় ভারত থেকে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আটকা পড়েছে ২৫০ পেঁয়াজবাহী ট্রাক। সেগুলো এখনও দেশে প্রবেশ করেনি। যেখানে বেশি দামের পেঁয়াজ বাজারে আসেনি, সেখানে কেন পেঁয়াজের দাম বাড়ল। গত বছরের মতো এবারও পেঁয়াজ নিয়ে সিন্ডিকেট শুরু হয়েছে। পেঁয়াজ কিনতে আসেন রওশন আরা তিনি বলেন, নিরুপায় হয়ে ৭০ টাকা কেজি দরে ২ কেজি পেঁয়াজ কিনেছি। খেয়ে তো বাঁচতে হবে। যদি দাম আরও বাড়ে তাহলেও কিনতে হবে। আরেক ক্রেতা মানিক মিয়ার অভিযোগ, যেই পেঁয়াজ গতকাল সোমবারও ৫০-৬০ টাকা কেজি ছিল সেটি আজ ৭০-৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দাম আরও বাড়ার আশঙ্কায় ৭৫ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি পেঁয়াজ কিনেছেন। দোকানদার বলেছে পেঁয়াজ আর পাওয়া যাবে না। বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা কাইয়ুম, মোস্তাক, সিরাজুল, মামুন, শরিফুল ইসলাম, আমান উল্লাহ, কাজল, আশরাফুজ্জামান, মোতালিব, আশিক ও সাব্বিরের সঙ্গে। প্রত্যেকেই বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। তারা দুই প্রকারের পেঁয়াজ যথাক্রমে ৬০ ও ৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। বিক্রেতা সিরাজুল ৪৩ টাকা কেজিতে কেনা পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনিসহ কোনও বিক্রেতাই জবাব দিতে পারেননি। পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা মাছুম হোসেন জানান, খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি ৫০ টাকা কেজি ধরে তিনি পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। গতকাল গাজীপুর আড়ত থেকে তিনি ৩৭-৩৯ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা: ইসমত আরা জানান, অভিযোগ পেয়ে বাজার পর্যবেক্ষণের পর দাম বৃদ্ধির সত্যতা পাওয়া যায়। পরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৮ ধারা মোতাবেক ছয় ব্যবসায়ীকে ১৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এদের মধ্যে আড়তদার মেসার্স শরীফ বাণিজ্যালয়কে ৫ হাজার ও সোহাগ বাণিজ্যালককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও চার খুচরা বিক্রেতাকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন জানিয়ে আরোও বলেন, বেশি দামে যারাই পেঁয়াজ বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।