গণবাণী ডট কম:
রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে কর্মচারীদের মারধরে রোগী পুশিলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম মারা গেছেন। এঘটনায় পুলিশ হাসপাতালটির ম্যানেজারসহ ৬ জনকে আটক করেছে।
আনিসুল করিম সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে বরিশাল মহানগর পুলিশে (বিএমপি) কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের বাবা। আনিস জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।
আনিসের পরিবারের অভিযোগ ৩১ তম বিসিএস পুলিশের এই কর্মকর্তাকে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে। ওই হাসপাতালটি ভর্তি করার কিছু সময় পরই তাকে মারধর করা হয় এবং এতে তিনি মারা যান। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবী উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় তারা পুলিশ কর্মকর্তা ওই রোগীকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। রাত ১২ টায় পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। তবে আদাবর থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা জানান, মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। থানায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আছেন। তারা বিষয়টি দেখছেন।
আনিসুল করিমের ভাই রেজাউল বলেন, আনিস কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার দুপুরে তাকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে যান। কাউন্টারে যখন ভর্তির ফরম পূরণ করছিলেন, তখন কয়েকজন কর্মচারী দোতলায় নেন। কিছুক্ষণ পর আনিসুল অজ্ঞান হওয়ার খবর পান। সেখান থেকে তাকে দ্রুত জাতীয় হৃদরোগ ইনিস্টিউটিটে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও বলেন, পরে আদাবর থানা পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতাল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এতে দেখা যায় দুপুর ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে ঢোকানো হয়, সেখানে হাসপাতালের ৬ কর্মচারী মিলে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এরপর নীল পোশাক পরা আরও দুজন কর্মচারী পা চেপে ধরেন। তার মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারী হাতের কনুই দিয়ে আঘাত করে। এসময় হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ পাশে দাঁড়ানো ছিল। পরে একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পিছমোড়া করে বাঁধা হয়। কয়েক মিনিট পর আনিস জ্ঞান হারান। কর্মচারীদের একজন আনিসকে মুখে পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে। কিছু সময় পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। কক্ষের দরজা লাগিয়ে আনিসের বুকে পাম্প করেন ওই নারী।
রেজাউল করিম আরো বলেন, আনিসের ব্লাডপ্রেসার ও হৃদরোগ ছিল। কিন্তু এ দুটির কোনোটিই মারাত্মক ছিল না। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গণপিটুনিতে তার ভাই মারা গেছে।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে বলেন, হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। আনিসুলের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।
মাইন্ড এইড হাসপাতালের সমন্বয়ক মো. ইমরান বলেন, হাসপাতালে আনার পর রোগী উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছিলেন। একে–ওকে মারধর করছিলেন। তাকে শান্ত করার জন্য ওই কক্ষে নেওয়া হয়। আনিসকে মারধর করা হয়েছে কেন? এবিষয়ে কোন জবাব দেননি ইমরান। খবর : দৈনিক ইত্তেফাক।