গণবাণী ডট কম:
বাংলাদেশের ইসলামী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নতুন আমীর হয়েছেন জুনায়েদ বাবুনগরী।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকালীন আমীর আহমদ শফীর মৃত্যুর দু মাসের মাথায় সংগঠনটির একটি সম্মেলনে এই নেতৃত্ব নির্বাচন করা হলো।
মি. বাবুনগরী একসময় হেফাজতে ইসলামের সেকেণ্ড-ইন-কমাণ্ড ছিলেন। কিন্তু উত্তরাধিকার নির্বাচন নিয়ে শীর্ষ নেতার সাথে মতবিরোধ দেখা দিলে তাকে পদ ছাড়তে হয়। আহমদ শফির মৃত্যুর আগেই তাদের বিরোধ চরম আকার ধারণ করে।
এক পক্ষে জুনায়েদ বাবুনগরী ও অন্য তরফে আহমেদ শফীর ছেলে আনিস মাদানী তাদের অনুসারীদের নিয়ে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যান।
আজ এক সম্মেলনের পর মি. বাবুনগরীকে আমীর ও নূর হুসাইন কাসেমীকে মহাসচিব করে ১৫১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়।
হাটহাজারী মাদ্রাসার এই সম্মেলনে যোগ দেননি আনিস মাদানী ও তার অনুসারীরা।
নতুন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সকাল দশটার দিকে শুরু হয়ে আড়াইটা পর্যন্ত চলা সম্মেলনে ৬৪ জেলা থেকে হেফাজতে ইসলামের সাড়ে পাঁচশ জন নেতা অংশ নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় আজ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে যাতে আহমেদ শফীর ছেলে আনাস মাদানী ও তার অনুসারীরা অংশ নেননি।
নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা।
মি. মাদানীর অনুসারী মঈনুদ্দিন রুহী গণমাধ্যমকে বলেন, “তারা একতরফাভাবে সম্মেলন করার উদ্যোগ নিয়েছে এবং তাতে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমটির ৬৫ জন নেতাকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। আমরা এই সম্মেলনকে অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ মনে করি। এজন্য আমরা কমিটি প্রত্যাখ্যান করছি।”
তারা নিজেদেরই হেফাজতে ইসলামের মূল অংশ মনে করেন বলে জানান।
আজিজুল হক ইসলামবাদী অবশ্য বলছেন, “ওনাদের সবাইকে দাওয়াত করার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু ওনারা দাওয়াত পাওয়ার আগেই হেফাজতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিডিয়ায় বিভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন। বিভিন্ন কারণে ওনারা মিটিং-এ হাজির হওয়ার পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছেন। সেই কারণেই হয়ত ওনারা মিটিং-এ উপস্থিত হননি। হেফাজতে ইসলামের সম্মেলন সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল।”
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় কওমী মাদ্রাসা-ভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমীর আহমেদ শফীর মৃত্যুর পর থেকে দলটির নতুন নেতৃত্ব নিয়ে তার ছেলের সাথে কোন্দল দেখা দেয়।
সংগঠনটির ভাঙনের দিকে যাচ্ছে কিনা সেনিয়ে আলাপ চলছে আহমদ শফীর মৃত্যুর পর থেকেই।
গতকাল আহমেদ শফীর ছেলে ও তার অনুসারীরা সম্মেলনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংবাদ সম্মেলন করে।
ব্লগারদের বিরুদ্ধে ঢাকার মতিঝিলে শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে হেফাজতে ইসলাম আলোড়ন তুলেছিল ২০১৩ সালে।
এরপর সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা আমীর আহমদ শফীর সাথে সরকারের সখ্যতা গড়ে ওঠে।।
গত কয়েক বছর ধরে সরকারের সাথে সখ্যতার প্রশ্নে সংগঠনটিতে পক্ষে-বিপক্ষে দু’টি ধারার সৃষ্টি হয়েছিল।
কারণ সরকার-বিরোধী বিভিন্ন ইসলামপন্থী দলের নেতারাও সংগঠনটিতে রয়েছেন।
এখন সংগঠনের নেতৃত্ব নিয়ে বিভক্তি দৃশ্যমান হয়েছে। দুই পক্ষের নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যেও তা উঠে এসেছে। খবর : বিবিসি।