গণবাণী ডট কম:
বাংলাদেশে আজ (রবিবার) থেকে শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাসের গণ টিকাদান কর্মসূচী। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সহস্রাধিক হাসপাতালে টিকা দেয়া হবে ডাক্তার-নার্সসহ সম্মুখসারির কর্মী এবং ৫৫ বছরের বেশি বয়সের নাগরিকদের। আজ সকাল ১০টার কিছু পরে রাজধানীর মহাখালিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দেশব্যাপী টিকিাদান কর্সুচীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোথন করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালিক। এসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ উর্দ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা হাসপাতালের একজন নার্সকে টিকা দেয়ার মধ্যে দিয়ে টিকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হলেও সত্যিকারের টিকাদান কর্মসূচী মূলত শুরু হয়েছে আজ থেকেই।
জনগণ যাতে টিকার ওপর আস্থা রাখতে পারে সেজন্য প্রথম দিন মন্ত্রীসভার সদস্য, বিচারপতিসহ রাষ্ট্রের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি টিকা গ্রহণ করবেন।
পুরো কর্মসূচীতে কাজ করবে এজন্য কাজ করবে মোট ২ হাজার ৪০০টি দল।
এরই মধ্যে ঢাকার জাতীয় টিকাদান কর্মসূচির স্টোর থেকে টিকার ডোজ কোল্ড বক্সে সংরক্ষণ করে ৬৪টি জেলার বিভিন্ন কেন্দ্র এবং প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এছাড়া টিকা সংরক্ষণ, টিকা দেয়া, টিকা কেন্দ্র পরিচালনা, টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসহ সব বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
প্রথম দিন যারা টিকা নেবেন:
রোববার সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রথমে টিকা দেবেন বলে জানা গেছে।
এরপর প্রধান বিচারপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী, জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর মতো সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও টিকা নেবেন বলে জানা গেছে।
এরপর সম্মুখ-সারির বিভিন্ন পেশার মানুষ অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা এবং যাদের বয়স ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে তাদেরকে বিনামূল্যে টিকা দেয়া হবে।
এভাবে একদিনে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি টিকা দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টিকা কার্যক্রম চলবে।
গত ২৭শে জানুয়ারি ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালের সিনিয়র নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে এক ডোজ টিকা দেয়ার মাধ্যমে এই টিকা কর্মসূচি শুরু হয়। ওইদিন মোট ২৬ জনকে টিকা দিয়ে হয়েছিল।
পরদিন পাঁচ শতাধিক ফ্রন্টলাইনারকে এই টিকা দেয়া হয়।
ওই দুই দিনে যে ৫৬৭ জন টিকা নিয়েছিলেন তাদের কারও মধ্যে গুরুতর কোন উপসর্গ দেখা না দেয়ায় এবার দেশব্যাপী শুরু হতে যাচ্ছে এই টিকা কার্যক্রম।
সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন যেভাবে
www.surokkha.gov.bd - এই ওয়েব পোর্টালে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে টিকার জন্য নিবন্ধন করতে হবে।
নিবন্ধন সম্পন্ন হলে মোবাইলে SMS এর মাধ্যমে ভ্যাকসিনের তারিখ ও কেন্দ্র জানিয়ে দেয়া হবে। অথবা ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে গেলে নিবন্ধন করা যাবে।
নিবন্ধনের ভিত্তিতে কেউ টিকা দেয়ার পর তাকে একটি কার্ডে পরবর্তী ডোজের সময় ও তারিখ লিখে দেয়া হবে।
প্রথমটি নেয়ার চার থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। নাহলে প্রথম ডোজ অপচয় হয়ে যাবে।
তবে স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে দেরি না করে প্রথম ডোজের চার সপ্তাহের মধ্যেই দ্বিতীয় ডোজ নিতে।
গত মাসেই ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটে উৎপাদিত ব্রিটেনের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ৭০ লাখ ডোজের চালান বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়।
এরমধ্যে ৫০ লাখ ডোজ বাংলাদেশের কেনা, বাকি ২০ লাখ উপহার হিসেবে পাওয়া।
ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যেন প্রথম চালানের টিকা যারা নেবেন, তাদের সবার দুই ডোজ সম্পন্ন করা যায়।
তবে প্রতি মাসে ভারত থেকে ৫০ লাখ করে জুন মাসের মধ্যে আরও আড়াই কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে।