গণবাণী ডট কম:
বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আজ বুধবার থেকে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা শুরু হয়েছে। এ লক্ষে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তারাবি নামাজ আদায় ও শেষ রাতে সেহেরি খেয়ে বুধবার প্রথম দিনের রোজা পালন করেছেন।
আত্মশুদ্ধি ও সিয়াম-সাধনার মাস রমজান। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সুসংবাদ নিয়ে প্রতি বছর ফিরে আসে মাহে রমজান। প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানসহ সওয়াবের নিয়তে রমজানে রোজা পালন করে, তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।’ ‘যে ব্যক্তি ইমানের সহিত সওয়াবের আশায় রমজানে রাত জেগে ইবাদত করে, তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।’ ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে জেগে ইবাদত করবে, তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’(বুখারি, প্রথম খণ্ড, হাদিস: ৩৭, ৩৬ ও ৩৪)।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির রমজানের চাঁদ দেখার বিষয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেছে, বুধবার থেকে রোজা শুরু।’
এদিকে মালয়েশিয়া, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের আকাশে গত সোমবার (১২ এপ্রিল) পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে দেশগুলোতে মঙ্গলবার থেকে রোজা শুরু হয়েছে। ইসলামিক বিধান অনুযায়ী রমজানের চাঁদ দেখা যাওয়ায় গত সোমবার দিবাগত রাতে সাহরি খেয়ে মঙ্গলবার রোজা রাখছেন ওইসব দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর এক দিন পর বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা যায়। ওইসব দেশের পরদিনই বাংলাদেশে রোজা ও ঈদ পালন হয়ে থাকে।
মুসলমানদের রোজা পালন বিষয়ে আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদে বলেন, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন এই মাসে রোজা পালন করে।’ ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য রোজার বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হয়েছিল; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫ ও ১৮৩)।
এদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মসজিদে প্রতি ওয়াক্ত নামাজে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি জামাতে অংশ নিতে পারবেন বলে নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। ১৪ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত মসজিদে নামাজ আদায়ে এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মো. সাখাওয়াৎ হোসেন স্বাক্ষরিত সোমবার জারিকৃত নির্দেশনায় বলা হয়, করোনা পরিস্থিতিতে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রতি ওয়াক্তে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশ নিতে পারবেন। রমজানে তারাবির নামাজে খতিব, ইমাম, হাফেজ, মুয়াজ্জিন ও খাদিমসহ সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন। জুমার নামাজে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুসল্লিরা অংশ নেবেন। মুসল্লিদের পবিত্র রমজানে তিলাওয়াত ও যিকিরের মাধ্যমে মহান আল্লাহর রহমত ও বিপদ মুক্তির জন্য দোয়া করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।