গণবাণী ডট কম:
নাম তার রোজিনা। বয়স আনুমানিক ২০ বছর। পিতা মাতার সাথে থাকে রাজধানীর উত্তর খানের মৈনারটেকের চাপানের টেক এলাকায়। তার পিতা লাল মিয়া, মাতার নাম নাছিমা বেগম।
এ তরুনীকে তার স্বজনেরা সব সময় চোখে চোখে রাখে। যাতে সে ঘরের বাইরে চলে যেতে না পারে। তারপরও সে মাঝে মাঝে ঘরের বাইরে চলে যায়। কারণ সে মানসিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধি।
গেল রবিবার সে বাসার সকলে চোখ ফাকি দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না।
অপরদিকে, গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) পুবাইল থানা পুলিশের একটি দল রবিবার রাতে টহল ডিউটি করছিল। রাত জেগে টহল ডিউটি করার সময় রাত অনুমান ১টার (২৬ এপ্রিল) দিকে পুবাইল থানাধীন বসুগাঁও বাইপাস রোডের পার্শ্বে ২০ বছর বয়সী একটি মেয়েকে সড়কের পাশে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তারা। পরে টহল ডিউটিরত জিএমপির পুবাইল থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) জামিল উদ্দিন রাশেদ তাকে উদ্ধার করেন। তিনি প্রথমে তার প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তিনি মেয়েটির পরণের কাপড় ছিড়ে যাওয়া কাপড়ের ব্যবস্থা করেন। তিনি মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসেন। তার সাথে কথা বলে বুঝতে পারেন মেয়েটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধি। তাই সে তার ঠিকানা সঠিকভাবে বলতে পারছিল না। তার সাথে বিভিন্নভাবে আলাপ-আলোচনা করে ভাংগা ভাংগা ঠিকানা শুনে পুলিশের ধারণা হয় মেয়েটির বাড়ী রাজধানীর উত্তরখান থানা এলাকা হতে পারে। পরে ঐ থানার পুলিশের মাধ্যমে স্থানীয় কাউন্সিলরদের সাথে যোগাযোগ করে পুলিশ নিশ্চিত হয়, যে মেয়েটির বাড়ী মৈনারটেক। জানা গেল মেয়েটির নাম রোজিনা।
পরবর্তীতে এসআই জামিল উদ্দিন রাশেদ মেয়েটির বাসার লোকজনের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে থানায় আসতে বলেন। তিনি জামা-কাপড় ছিরে যাওয়ায় তাকে জামাকাপড় এর ব্যবস্থা করেন, তার চিকিৎসা করেন এবং খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেন।
পরে সোমবার ভোরের দিকে রোজিনার পিতা মাতা থানায় আসলে তিনি তাকে তার পিতা মাতার কাছে হস্তান্তর করেন। এসময় থানায় এক আনন্দঘন ও আবেগময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। জামিল উদ্দিন রাশেদের মহানুভবতায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধি নারী নিরাপদে পুনরায় স্বজনদের কাছে ফিরে গেছে, এজন্য তার সহকর্মীরা তাকে অভিনন্দন জানান। রোজিনার পিতা মাতাও তার নিকট গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মেয়েকে থানা থেকে হাসিমুখে বেরিয়ে যান।
এ বিষয়ে জিএমপির পুবাইল থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) জামিল উদ্দিন রাশেদ জানান, টহল ডিউটি করার সময় সড়কের পাশে মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখে আমরা তাকে উদ্ধার করি। পরে আশপাশের দোকানে থাকা লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি, মেয়েটি রাতের আধারে একটি অটোরিক্সার সাথে ধাক্কা লেগে আহত হয়ে সেখানে পড়ে যায়। ভয়ে কেউ কাছে আসেনি। প্রাথমিকভাবে সেখানে কেউ তাকে চিনতে না পারেনি। মেয়েটি থুতনী ও মাথায় আঘাত পেয়েছিল। প্রথমে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। পরে তার খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে তার স্বজনজের খুঁজে বের করি।