গণবাণী ডট কম:
বিশেষজ্ঞদের কড়া সতর্কবার্তা, উদ্বেগ, নানা পদক্ষেপ সত্বেও অনেক বেশী সংক্রামক করোনার ভারতীয় ধরণ দেশে প্রবেশ করেছে। দেশের অভ্যন্তরে অন্তত দুই জনের শরীরে করোনার ভারতের ধরণ শনাক্ত হয়েছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এটি পেয়েছে। আজ শনিবার (৮ মে) আর এ–সংক্রান্ত তথ্য জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটাতে (জিআইএসএআইডি) প্রকাশিত হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ধরণে আক্রান্ত রোগীরা ভারত থেকে ফিরেছেন। ভারত থেকে আগত ৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে দুই জনের নমুনায় ভারতীয় ধরণ শনাক্ত হয়েছে। অপর ৪ জনের শরীরে পাওয়া নমুনায় ভারতীয় ধরণের কাছাকাছি বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তাদের পরীক্ষা চলছে। তারা চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন এবং বর্তমানে যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।
দেশে এমন সময়ে ভারতীয় ধরণ শনাক্ত হয়েছে, যখন ভারত করোনার টিকা রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে, সরকার বিকল্প কোন উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের সর্বাত্বক চেষ্টা করছে। কিন্তু এখনো দেশে কোন টিকা আসেনি। যখন, করোনার সংক্রমণ রোধ করতে দেশে অঘোষিত লক ডাউন চলছে। কিন্তু মানুষ কোন কিছুই মানছে না। মনের আনন্দে ঈদ শপিং করছে, ঈদ আনন্দ করতে শহর ছেড়ে গ্রামের ফিরছে।
আর যখন ভারত করোনার এ ধরণ নিয়ে সবচেয়ে খারাপ সময় অতিক্রম করছে। ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের একটি স্ট্রেনকে ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য কর্তৃক ‘উদ্বেগের রূপ’ হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। এটি অন্য স্ট্রেনগুলো থেকে আরো বেশি দ্রুত ছড়ায় বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অপরদিকে, ভারতে সব রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে করোনা। আজ প্রথমবারের মতো দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ ৪ হাজারের বেশী মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে প্রাণ হারিয়েছেন ৪ হাজার ১৮৭ জন। একইসময়ে নতুন রোগী পাওয়া গেছে ৪ লাখ ১ হাজার।
সেখানে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর এই স্ট্রেনটি পিএইচই কর্তৃক বি১৬১৭.২ নামে পরিচিত। এ ছাড়া দেশজুড়ে ভাইরাসটির ৪৮টি ক্লাস্টার পাওয়া গেছে। যা মূলত ভ্রমণের সঙ্গে সম্পর্কিত। যদিও তুলনামূলকভাবে ক্ষেত্র কম রয়েছে। যাইহোক, বর্তমানে স্ট্রেনটি নিয়ে উদ্বেগের মাঝেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কোভিড-১৯ এর স্ট্রেনটি ভ্যাকসিনকে এড়িয়ে যেতে পারে এমন কোনো কারণ এখন অবধি তাদের চোখে পড়েনি।
ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনার তিনটি ধরনের মধ্যে এই স্ট্রেন একটি। যা যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হয়েছে এবং পিএইচই কর্তৃক এটির তদন্ত চলছে। কোভিড-১৯ এর বাকি দুটি ধরন হলো বি১৬১৭.১ ও বি১৬১৭.৩। বি১৬১৭.২ স্ট্রেনটি পুরো ইংল্যান্ড জুড়ে এখন অবধি ৫০০ এর অধিক শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে লন্ডন এবং দেশের উত্তর-পশ্চিমে।
বিশ্বের অন্তত ১৭টি দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরণ শনাক্ত হয়েছে। গেলো মাসের শেষের দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।