গণবাণী ডট কম:
বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলার পুলিশ বলছে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া থেকে মাদারীপুরের বাংলাবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া দুটি ফেরিতে প্রচণ্ড ভিড় আর গরমে হিট স্ট্রোক আক্রান্ত হয়ে অন্তত ১৫ জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাদের মধ্যে ৫ জন মারা গেছে।
“আমরা অসুস্থ অবস্থায় তাদের ফেরি থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিন জন পুরুষসহ মোট ৫ জনকে এ পর্যন্ত মৃত ঘোষণা করেছেন,” গণমাধ্যমকে বলেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।
তবে স্থানীয়রা বলছেন খাজা এনায়েতপুরি ও শাহপরান নামের দুটি ফেরি থেকে যাত্রীদের নামার সময় এ ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে এনায়েতপুরির চারজন যাত্রী ও শাহ পরানের ১ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ সুপার অবশ্য জানিয়েছেন যে ফেরি মাঝ নদীতে থাকার সময় গরমে ও ভিড়ের কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু নদীতে থাকার কারণে তাদের কোন চিকিৎসা বা অন্য কোন ব্যবস্থা করা যায়নি।
ফলে ফেরি পন্টুনে ভেড়ার আগেই কয়েকজন মারা যান বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে লকডাউন জনিত বিধিনিষেধের কারণে ফেরি পারাপার ও লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ রাখার চেষ্টা করেও যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে তা শেষ পর্যন্ত কার্যকর রাখা যায়নি।
ফেরি খাজা এনায়েতপুরি ও শাহ পরানেও ছিলো প্রচণ্ড ভিড়। আর এসব ফেরিতে ওঠা ও নামা-দু ক্ষেত্রেই ব্যাপক হুড়োহুড়ি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক মীর নাসির উদ্দিন উজ্জ্বল।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ঈদযাত্রাকে নিরুৎসাহিত করার জন্য দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ রেখেছিল কর্তৃপক্ষ।
তারপরও শুক্রবার থেকেই ঢাকা ছাড়তে মরিয়া মানুষের ঢল নামে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টে।
জরুরি ও পণ্যবাহী পরিবহন চলাচলের জন্য যে ফেরিগুলো চালু ছিল, শুক্রবার তার কোন কোনটিতে মানুষের চাপে গাড়ি তোলা সম্ভব হয়নি বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে খবর বেরিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাতেই ঘোষণা করা হয় মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও মুন্সিগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টে পদ্মা নদীতে দিনের বেলা একেবারেই কোন ফেরি চলবে না।
শুধু পণ্য পরিবহন ও অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য জরুরি যানবাহনের জন্য রাতের বেলায় কিছু ফেরি চালু থাকবে। কিন্তু তারপরেও বাড়িমুখো যাত্রী ঠেকানো সম্ভব হয়নি।
পরিস্থিতি বিবেচনায় সোমবার থেকে ফেরি বাড়ানো হলেও ঈদকে সামনে রেখে যাত্রীদের ভিড় আরও বেড়েছে।
এ অবস্থায় মাওয়ায় বিজিবিও মোতায়েন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
শেষ পর্যন্ত সোমবার থেকে ছোট বড় মিলিয়ে ১৪টির মতো ফেরি সেখানে চলাচল শুরু করেছে।
এই পথে মূলত বরিশাল বিভাগের সবগুলো জেলা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, খুলনা, মংলা বন্দর, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ. সাতক্ষীরা ও নড়াইলের কিছু অংশের সাথে সড়কপথে যাতায়াত করে মানুষ। খবর : বিবিসি।