গণবাণী ডট কম:
মহামারি করোনা সংক্রমণ রোধ করতে আজ সোমবার সকাল থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে তিনদিনের সীমিত লকডাউন। বৃহস্পতিবার (পহেলা জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত এই লকডাউন চলবে। তবে সেদিন থেকে সর্বাত্মক লকডাউন দেয়া হবে বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহন চলতে দেখা যাচ্ছে না, তবে অনেক ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। তবে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ ও অন্যান্য গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে।
পরিবহনের অভাবে ঢাকার সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অফিসগামী যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হতে দেখা গেছে। অনেকে দীর্ঘক্ষণ ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেছেন কোন যানবাহনের অপেক্ষায়।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে আগের বিধিনিষেধের সঙ্গে আরও কিছু নতুন শর্ত যোগ করে এই লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। গতকাল রোববার এই বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এর আগে, জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি ১৪ দিনের সম্পূর্ণ ‘শাট ডাউন’ দেয়ার সুপারিশ করেছিল।
তিন দিনের এই লকডাউনের শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে সরকারি ও বেসরকারি অফিস।
এই সময় মার্কেট, শপিং-মল, বিনোদন কেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। হোটেল রেস্তোরাঁ খোলা থাকলেও সেখানে বসে খাওয়া যাবে না।
এই লকডাউন শুরু হচ্ছে এমন সময়ে যখন, আগের দিনই বাংলাদেশে কোভিড আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। এদিন মারা গেছেন ১১৯ জন।
এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ১৭২ জনে। সেদিন ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৫২৬৮ জন।
যা করা যাবে, যা করা যাবে না
নতুন যেসব বিধি-নিষেধের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- সারা দেশে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ছাড়া সব ধরণের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহলের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করবেন।
দ্বিতীয়ত, সব ধরণের মার্কেট, শপিং-মল, পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
তৃতীয়ত, খাবারের দোকান, হোটেল রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত শুধু খাবার বিক্রি (অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে।
চতুর্থত, সরকারি-বেসরকারি অফিস বা প্রতিষ্ঠানে শুধু প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিশ্চিত করতে নিজ নিজ অফিসের ব্যবস্থাপনায় তাদের আনা-নেয়া করতে হবে।
পঞ্চমত, জনসাধারণকে মাস্ক পরার জন্য আরও প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
নতুন এসব নিয়ম কানুনের সাথে আগের জারি করা বিধি-নিষেধও কার্যকর থাকবে।
এর আগে বাংলাদেশে কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সোমবার থেকে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেয়ার পর শনিবার ভোর থেকেই দলে দলে মানুষ ঢাকা ছাড়তে শুরু করে।
ইতোমধ্যেই ত্রিশে জুন মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকার পার্শ্ববর্তী সাতটি জেলায় লকডাউন কার্যকর থাকায় দূরপাল্লার বাস ঢাকায় আসা যাওয়া না করতে পারলেও বন্ধ করা যায়নি ঢাকামুখী এবং ঢাকা থেকে বের হওয়া মানুষের ঢল।
তবে শুক্রবার রাতে সরকারের তরফ থেকে সোমবার থেকে কঠোর লকডাউনের কথা বলার পর ঢাকামুখী মানুষের ভিড় কমে ঢাকা ছাড়া মানুষের ভিড় বেড়েছে। খবর : বিবিসি।