গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানাধীন কুনিয়া তারগাছ এলাকায় নিজের সন্তানকে শ্বশুরের দেয়া সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে সাবেক শ্বাশুড়ীকে হত্যার ৬ মাস পর রহস্য উদঘাটন করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশন (পিবিআিই)। গত ৫ জুলাই দুইদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিগ্যাসাবাদ শেষে ঐ গৃহবধু শ্বাশুড়ী হত্যার দায় স্বীকার করে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
নিহত শ্বাশুড়ীর নাম জমিলা খাতুন। তিনি গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানাধীন কুনিয়া তারগাছ এলাকার মৃত আশকর আলী বিএসসির স্ত্রী।
গ্রেফতার গৃহবধূর নাম নাসিমা আক্তার লিলি (৪৫)। তিনি নিহত জমিলা খাতুনের বড় ছেলে আশরাফুজ্জামান সেলিমের সাবেক স্ত্রী এবং একই এলাকার আকবর আলীর মেয়ে।
গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশন (পিবিআিই) এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, নিহতের বড় ছেলে ও তার সাবেক স্ত্রী নাসিমা আক্তার লিলির দুটি ছেলে আছে। সেলিমের পিতা জীবিত অবস্থায় তাদের দুই সন্তানের নামে একটি ৫ তলা বিল্ডিং হেবাদান পত্র করে দেন। দলিলে দুই সন্তানের পিতা হিসাবে সেলিমের নাম উল্লেখ আছে। পরে ২০১৮ সালে সেলিমের সাথে নাসিমার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ২০১৯ সালে তার সেলিম উক্ত ভবন তার মা নিহত জমিলা খাতুনের নামে সাব কবলা দলিল করে দেন। এরপর থেকে জমিলা খাতুন সেলিমের দুই ছেলে এবং নাসিমাকে বিতারিত করার চেষ্টা করে।
এরই জের হিসাবে ২০২১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নাসিমা তার অপর সহযোগীদের নিয়ে জমিলা খাতুনকে বাড়ীর সামনে থকে ধরে নিয়ে আটকে রাখে এবং মারধর করে। পিটিয়ে রক্তাক্ত করে জমিলাকে রাস্তায় ফেলে দেয়। তার কাছে থানা টাকায় পয়সা ছিনিয়ে নেয়। পরে তিনি ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশ ঐদিন নাসিমাকে গ্রেফতার করে।
মামলাটি দীর্ঘ ০৪ মাসের অধিক সময়কাল গাজীপুর মহানগরের গাছা থানা পুলিশ তদন্ত করে কোন রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকা পিবিআই গাজীপুর জেলাকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন। আসামী জেল খানায় থাকাবস্থায় মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের জন্য মামলাটি হস্তান্তর করা হলে নাসিমা আক্তার লিলিকে আদালতের নির্দেশে মামলা সংক্রান্তে জিজ্ঞাসাবাদের নিমিত্তে ২ দিনের পুলিশ রিমান্ড প্রাপ্ত হয়ে গত ৫ জুলাই জেলা কারাগার থেকে পিবিআই হেফাজতে নেয়। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি স্বেচ্ছায় আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এতে তিনি হত্যার কারণ ও আরো কারা জড়িত ছিলো তার বর্ণনা দিয়েছেন।