গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার কপাটিয়াপাড়া এলাকার বহুল আলোচিত অজ্ঞাত মহিলা (২০) হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন এবং আসামী গ্রেফতার করলো পিবিআই, গাজীপুর।
মোবাইল ফোন আত্মসাতের প্রতিশোধ নিতে ভাড়া করে পতিতা এনে খুন করে ফাঁসানোর জন্য খুনের ঘটনা ঘটানো হয়। পরে পুলিশের তদন্তে নিজেই ফেঁসে গেছে এক যুবক। এ ঘটনার মুল হোতাকে গ্রেফতারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধিতে ঘটনা প্রকাশ করেছে সে।
গ্রেফতার যুবকের নাম আসামী মোঃ সুমন মিয়া (৩৬)। সে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন কপাটিয়াপাড়া এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে।
গাজীপুর জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বৃহস্পতিবার বিকালে এ তথ্য জানান।
তিনি আরো জানান, গাজীপুরের শ্রীপুর থানাধীন পশ্চিম কপাটিয়া সাকিনস্থ মোঃ রফিকুল ইসলামের পুকুর থেকে অজ্ঞাত পরিচয় এক মহিলার (২০) গলাকাটা লাশ পানিতে ভাসমান অবস্থায় পেয়ে উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এসময় মরদেহের পড়নে একটি খয়েরী রংয়ের জামা, যাহা এ্যাম্ব্রয়ডারী নকশী করা ও লাল রংয়ের পায়জামা পরিহিত ছিল। পরে এ সংক্রান্তে শ্রীপুর থানার এস আই মোঃ নাজমুল সাকীব বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
মামলাটি শ্রীপুর থানা পুলিশ প্রায় ৩ মাসের অধিক তদন্ত করে এবং তদন্তাধীন অবস্থায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার মাধ্যমে পিবিআই গাজীপুর জেলায় পরবর্তী তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়।
পরে পিবিআই ডিআইজ বনজ কুমার মজুমদারের তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমানের সহযোগীতায় মামলাটির তদন্ত করেন পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আব্দুল কাদের। তিনি চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি হতে মামলাটি তদন্ত শুরু করেন। পরে মামলা ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সুমন মিয়াকে গত ২৫ আগষ্ট ভোরে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন কপাটিয়াপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি জানান, আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে পেশায় অটোরিক্সা চালক , তার স্ত্রী জর্ডানে থাকে। তার স্ত্রীর দেয়া টাকা দিয়ে সে একটা ভিভো মোবাইল সেট কিনে। সেই মোবাইল তার এলাকার সফিকুল ইসলামের ছেলে হৃদয় তার কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে পরে আত্মসাৎ করে। একারণে হৃদয়ের প্রতি তার ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ঘটনার দিন মধ্যরাতে আসামী সুমন শ্রীপুর থানার নয়নপুর বাজারে গিয়ে ভাসমান পতিতা ‘‘রোজিনা’’ নামধারী পরিচয়ের একটি মেয়েকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্কের জন্য ভাড়া করে একটি অটোরিক্সা ভাড়া করে কপাটিয়া পাড়ায় হৃদয় এর বাড়ীর পাশে বাঁশ বাগান ও জঙ্গলে নিয়ে আসে। তারপরে ঐ মেয়ের সাথে দুই দফায় শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে রোজিনা তার কাছে টাকা চাইলে সে রোজিনাকে বাথরুমের যাবার কথা বলে তার বাড়ীতে গিয়ে বাড়ী থেকে বটি নিয়ে আসে এবং রোজিনাকে মাটিতে শুয়াইয়া রোজিনার নাক মুখে চাপ দিয়ে ধরে বটি দিয়ে জবাই করে।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হৃদয়কে ফাঁসানোর জন্য আসামী সুমন রোজিনার লাশ পা ধরে টেনে হৃদয়দের পুকরে ফেলে দেয়। তারপরে সে বটি সাথে নিয়া সেখান থেকে তার বাড়ীতে চলে আসে। পরের দিন সেই বটি ভেঙ্গে ফেলে এবং এলাকায় ফেরিয়ালা আসলে তার কাছে বাইশ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করে দেয়।
তিনি আরো জানান, আসামী মোঃ সুমন মিয়াকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে সে নিজেকে ঘটনার সাথে জড়িয়ে সেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।