গণবাণী ডট কম::
গাজীপুর জেলা শ্রীপুর থানার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের পাবুরিয়াচালা এলাকার বহুল আলোচিত মোঃ রাসেল হত্যাকান্ডের ১৪ মাস পরে মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুর। এ ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর আসামীরা আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধি দিয়েছে।
নিহতের নাম মো: রাসেল (১৯)। তিনি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন পাবুরিয়ারচালা এলাকার মোঃ জমির আলীর ছেলে।
মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো, মোঃ রানা (২২)। তিনি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন পাবুরিয়ারচালার মোঃ আইয়ুব আলীর ছেলে। মোঃ হেলাল (৪৫)। তিনি একই এলাকার মৃতঃ আঃ হকের ছেলে। অপরজন মোঃ কাউছার (২৩)। তিনি একই এলাকার মৃতঃ মোঃ মুক্তার হোসেনের ছেলে। তাদেরকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর গাজীপুর জেলা শ্রীপুর থানাধীন পাবুরিয়াচালা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান গতকাল শুক্রবার দুপুরে এসব তথ্য জানান।
তিনি আরো জানান, গত ২০২০ সালেল ১০ জুলাই দুপুরে নিহত রাসেল পাবুরিয়াচালা স্কুল মার্কেটে যাওয়ার জন্য বাড়ী হতে বের হয়ে বাড়ীতে ফিরে আসেনি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে কোথাও না পেয়ে রাসেলেল পিতা মোঃ জমির আলী বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় একটি জিডি করে। এর ৫দিন পরে গত ১৫ জুলাই সকালে বাদীর বাড়ী হতে অনুমান ১ কিঃমিঃ দক্ষিন দিকে শহুরের টেক নামীয় গজারী বনের ভিতরে গজারি গাছের সাথে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো ও পুরো শরীরে পোকায় খাওয়া পঁচা ঝুলন্ত অবস্থায় মোঃ রাসেলের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পরে শ্রীপুর থানা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরন করে। এ ঘটনায় অপমৃত্য মামলা রুজু হয়। পরবর্তীতে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে ময়না ময়না তদন্তের রিপোর্টের আলোকে জানা যায় বাদীর ছেলেকে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ সংক্রান্তে নিহতের বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় একটি নিয়মিত হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি জেলা পাঁচ মাস তদন্ত করে কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারে নাই এবং মামলার কোন প্রকার রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পারায় পুলিশ হেডকোয়াটার্স নির্দেশে পিবিআই গাজীপুর জেলাকে পরবর্তী তদন্ত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
ডিআইজি পিবিআই বনজ কুমার মজুমদারের তত্ত্বাবধায়নে পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমানের সহযোগীতায় মামলাটির তদন্ত করেন পুলিশ পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম।
তিনি আরো জানান, তদন্তকালে উক্ত আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী কাউছার এর মেঝ ভাই মোঃ ফরিদ বিদেশে থাকে। ফরিদের স্ত্রী নাদিরার সাথে মোঃ রাসেলের পরকিয়া প্রেম ছিল। রাসেল এবং গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ রানা একই সাথে চলাফেরা করত এবং রাসেল রানার সাথে তার দোকানে রাত্রী যাপন করত। এক পর্যায় গ্রেফতারকৃত আসামী রানার সাথে নাদিরার গোপন সম্পর্ক হয়। উক্ত সম্পর্ক রাসেল জানতে পারায় তাদের মধ্যে শত্রুতা শুরু হয়। এক পর্যায় গত ২০২০ সালের ১০ জুলাই তারিখ দুপুরে রাসেলকে নাদিরাকে ফোন করলে নাদিরা রাসেলকে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। এদিকে নাদিরা ফোনের মাধ্যমে হুকুম করায় উপরোক্ত গ্রেফতারকৃত আসামী রানা ও অন্যান্য গ্রেফতারকৃত আসামী কাউছার এবং হেলালদের সহযোগিতায় রাসেলকে গত ১০ জুলাই দুপুর অনুমান ১৪.৩০ ঘটিকার সময় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ রানা, মোঃ কাউছার ও মোঃ হেলালগণ মোঃ রাসেলকে গলায় রশি দিয়া ফাঁসিতে শ্বাসরোধ করতঃ হত্যা কান্ডের লাশ গুম করার জন্য ঘটনাস্থলে শহুরের টেক গজারী গাছের সাথে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে।