গণবাণী ডট কম:
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এক্রিকিয়েট ল্যাব এবং আধুনীক কৃষির মাধ্যমে অবশ্যই আন্তর্জাতিক বাজারে আমরা কৃষি পন্য রপ্তানী করতে পারব। আমাদের দেশের জলবায়ু, জমি, খুবই উর্ভর। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। বঙ্গবন্ধু বারবার বলতেন আমার উর্ভর জমি রয়েছে তবে আমরা কেন খাদ্য ঘাটতিতে থাকব। আমরা খাদ্যে ঘাটতিতে নাই। আমরা উৎবৃত্ত ফসল সারা পৃথিবীতে আমরা রপ্তানী করব।
এসময় মন্ত্রী আরো বলেন, আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে পেয়াজের দাম কমে যাবে। পেয়াজ পচনশীল হওয়ায় কৃষকরা মজুত রাখতে না পায় এবং পেয়াজের সিজন শেষ মুহুর্তের কারনে পেয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রীষ্মকালীণ এবং আমদানীকৃত পেয়াজ বাজারে আসলেই দাম কমে যাবে।
মন্ত্রী রোববার সকালে গাজীপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)’র ‘কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালা-২০২১’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক আরো বলেন, আমরা সবার কাছে খাবার পৌছে দিতে চাই। দেশে পর্যাপ্ত খাবার মজুদ আছে। চালের দাম কিছুটা বেড়েছে এটা আমি অস্বীকার করবো না। কম আয় বা সীমিত আয়ের মানুষের একটু কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ অবস্থা নাই।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ২০% যা আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ১৩-১৪% এ নিয়ে আসতে চাই এবং অতি দরিদ্র্যের হার ২০২৩ সালের মধ্যে ১০% এর নিচে নিয়ে আসতে চাই। দেশে মানুষের খাদ্যাভাস পরিবর্তন হচ্ছে। তবে এর জন্য মানুষের আয় বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা আমাদের মাথাপিছু আয় ৫০০০ ডলার করতে চাই। কারণ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে হলে আমাদের মাথাপিছু আয় বাড়াতে হবে। কৃষি ক্ষেত্র আমাদের অর্থনীতির একটা বড় দিক। তাই কৃষিক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার দিতে চাই। তাই সেটি করতে আমরা কৃষিকে আধুনিকায়ন করতে চাই, কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণে নিয়ে যেতে চাই। কৃষির বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে কৃষককের জন্য কৃষিকে লাভজনক খাত হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
বারির কাজী বদরুদ্দোজা মিলনায়তনে অয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, এমপি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, সাবেক সচিব ও বিএআরসি’র প্রাক্তন নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. জহুরুল করিম। অনুষ্ঠানে সম্মানিত বিশিষ্ট বিজ্ঞানী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বারি’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক (অব.) ও এমেরিটাস সায়েন্টিস্ট, এনএআরএস, ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম, সাফল্যের উপর সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা উপস্থাপন করেন বারি’র পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. তারিকুল ইসলাম। এসডিজি-২০৩০ ও ভিশন ২০৪১ অর্জনে বারি’র গবেষণা কৌশল: একটি রোডম্যাপ)’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. মো. কামরুল হাসান।
গত অর্থবছর যে সকল গবেষণা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছিল সেগুলোর মূল্যায়ন এবং এসব অভিজ্ঞতার আলোকে আগামী বছরের গবেষণা কর্মসূচি প্রণয়নের উদ্দেশ্যে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। কর্মশালার কারিগরি অধিবেশন ১১, ১২, ১৭, ১৮, ১৯ অক্টোবর দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে। এই গবেষণা পর্যালোচনা তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। আঞ্চলিক গবেষণা পর্যালোচনা, অভ্যন্তরীণ গবেষণা পর্যালোচনা ও কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা। প্রথমে আঞ্চলিক পরে অভ্যন্তরীণ ও সবশেষে কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালার মাধ্যমে গত বছরের গবেষণা কার্যাবলীর বিশ্লেষণ ও পরবর্তী বছরের গবেষণা কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়ে থাকে যে কারণে এই কর্মশালার গুরুত্ব অপরিসীম। বিভিন্ন পর্যায়ের এই কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কৃষক প্রতিনিধি, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে স্থানীয় ও আঞ্চলিক কৃষির সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং সেই আলোকে গবেষণা কার্যক্রম প্রণীত হয়। আঞ্চলিক গবেষণা পর্যালোচনা অঞ্চলভিত্তিক অনুষ্ঠিত হয়। অভ্যন্তরীণ ও কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা বারি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়।