গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরে বিভিন্ন সড়কের নামকরণ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে করা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বাসা/বাড়ীর ট্যাক্স মওকুফ করার ঘোষণা দিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ। তিনি মঙ্গলবার সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আয়োজিত শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে কিরণ আরো বলেছেন, সরকারের সকল বিধিবিধান অনুসরণ করে মহানগরের প্রতিনিটি এলাকার রাস্তার নামকরণ শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে করার নীতিগস সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা করপোরেশনের আগামী মাসিক সভায় অনৃমোদন নেয়া হবে। তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ বা তাদের পরিবার যে বাসায় বসবাস করেন, সে বাসার ট্যাক্স মওকুফ (করমুক্ত) করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, এই সিটি করপোরেশন বাংলাদের বৃহৎ সিটি করপোরেশন। এই সিটি করপোরেশনের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী ৮ হাজার কোটি টাকার অধিক বরাদ্ধ দিয়েছেন। এই বরাদ্ধ যদি সুন্দর ও সুষমভাবে প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রকল্পগুলো নিতে পারলে গাজীপুর সিটির সমস্যা হয়ত থাকত না। এই দায়িত্ব বড় চ্যানেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি আরো বলেন, যে আশা-প্রত্যাশা নিয়ে আমাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সে দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালনে আমরা বদ্ধপরিকর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। তিনি বলেন, আমরা এ বছর মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ পালনের পাশাপাশি বাংলাদেশ উন্নত দেশের মর্যাদা পাবার যে গৌরব তাও আমরা অর্জন করেছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এক ডাকে, এক আহবানে এবং তাঁর ইশারায় জীবনের মায়া ত্যাগ করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়েই আমরা বিজয় অর্জন করেছি, স্বাধীনতা পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু আমাদের দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের প্রতিটিতেই অংশগ্রহণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু দেশ পুনর্গঠন করেছন আর তঁার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য শামসুন্নাহার ভূঁইয়া, গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির, জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লহ খান, জাতীয় পার্টি প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লহ মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইলিয়াস, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: ইমান আলী, কাউন্সিলর শাহজাহান সাজু। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম ও সঞ্চালনা করেন তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো: মুজিবুর রহমান কাজল।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: ইমান আলী অভিযোগ করেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সড়কের নামকরণের আবেদন নিয়ে সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কাছে গেলে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর আলম মুক্তিযোদ্ধাদের ৭১ সালের কামলা বলে সম্বোধন করেন এবং এখন আপনার যে ভাতা নেন তা কামলা হিসাবে বেতন নেন। ইমান আলীর এ বক্তব্য শুনার পর উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাগণ ও সকল অতিথিবৃন্দ মর্মাহত হন এবং অনেকে তাদের বক্তৃতায় নিন্দা জানান।
অনুষ্ঠানে মহানগরীর আট শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।