গণবাণী ডট কম:
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ও জাতীয় খেলা কাবাডি খেলার প্রসার ও ভালো খেলোয়াড় তৈরি করতে নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো: জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। তিনি আরো বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কাবাডি খেলাকে জাতীয় খেলা ঘোষণা করেছিলেন। ইতোমধ্যে কাবাডি খেলাকে গুরুত্ব দিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমপ্লেক্স তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ভবন, কার্যালয় এবং হোস্টেল নির্মান করা হয়েছে। তিনি শনিবার সকালে প্রধান অতিথি হিসাবে গাজীপুরের রাজবাড়ী মাঠে আইজিপি কাপ-২০২১ জাতীয় যুব কাবাডি (বালক ও বালিকা) অনূর্ধ্ব-১৯ এর উদ্ধোধনকালে এসব কথা বলেন।
এসম তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক মানের কাবাডি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ভালো খেলোয়াড় তৈরির জন্য কাবাডি খেলাকে বিকেএসপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আইজিপি কাপ-২০২১ জাতীয় যুব কাবাডি (বালক ও বালিকা) অনূর্ধ্ব-১৯ এর আয়োজন করা হয়। গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের যৌথ আয়োজনের এ প্রতিযোগিতায় ব্রম্মপুত্র অঞ্চলের গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ জেলার বালক ও বালিকা দল অংশ গ্রহণ করছে। উদ্বোধনী ম্যাচে গাজীপুর ও শেরপুর জেলার জেলা দলের ১৮৪ জন নারী ও পুরুষ খেলোয়াড় অংশ নিচ্ছে। উদ্বোধনী খেলায় গাজীপুর ও শেরপুর জেলার দল অংশ গ্রহণ করে। প্রথম রাউন্ড বালক। মানিকগঞ্জ ৩৬ টাংগাইল ৪৩/ গাজীপুর ৩০ শেরপুর ৬০/জামালপুর ৩৩ ময়মনসিংহ ৪৩/নেত্রকোনা ৯ কিশোরগঞ্জ ৫৫ পয়েন্ট অর্জন করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম বলেন, ছোট বেলায় আমরা অনেক কাবাডি খেলেছি। কিন্তু ধীরে ধীরে খেলাটি হারিয়ে যেতে বসেছিল এখন কাবাডি খেলায় আগ্রাহ বাড়াতে স্কুল কলেজগুলিতে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে গাজীপুরের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, কাবাডি খেলা আমাদের জাতীয় খেলা। কিন্তু কালের পরিবর্তনে খেলাটি প্রায় হারিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু এখন আবার এই খেলায় ছেলে-মেয়ারা আগ্রহী হচ্ছে। নানা ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় গাজীপুরে দেশের বিভিন্ন জেলার প্রতিযোগিদের নিয়ে ১৪ টি দলের খেলা শুরু হয়েছে।
অপরদিকে, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ও জাতীয় খেলা কাবাডি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে বলে অভিযোগ করেছেন গাজীপুরে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আসা খেলোয়াড়গণ। তাদের অভিযোগ, আমরা নিজেদের অর্থে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকি। যে কোন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আমাদের নিজেদের টাকা আসা যাওয়া করতে হয়। আমরা কোন সরকারী বা আয়োজক কারো কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পাই না। এমন অভিযোগ করেছেন গাজীপুর মহিলা দলের সদস্য লতিফা। লতিফা এবার গাজীপুর শফিপুর রেসিডেন্সিয়াল স্কুলে ১০ম শ্রেণীতে অধ্যয়ন করছে। একই অভিযোগ উর্মি ও সুমাইয়ার। তারা সকলেই লেখা পড়ার পাশাপাশি কাবাডি খেলায় প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সফলতা অর্জন করেছে। কালিয়াকৈরের শেখ ফজিলাতুন্নেছা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী আমেনা বলেন, আমরা পৃষ্ঠপোষকতা পেলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশের জন্য অনেক সুনাম ও সম্মান অর্জন করতে পারতাম। কিন্তু আমরা সে রকম কিছু পাচ্ছি না।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গাজীপুর জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটনের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বরকত উল্লাহ খান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) জাকির হাসান, গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবুল কালাম, ঢাকা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা ও বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এম বি সাইফ, বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, গাজীপুর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আমির হোসেন, সদর থানার ওসি রফিকুর ইসলাম প্রমুখ।