গণবাণী ডট কম:
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আবারও ছয় মাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ফলে সরকারের নির্বাহী আদেশে তাঁর মুক্তির মেয়াদও ছয় মাস বাড়লো।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিদেশে যাওয়া যাবে না-আগের শর্ত অনুযায়ীই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএনপি নেত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে মেয়াদ বাড়ানো এবং বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি না মেলায় খালেদা জিয়ার পরিবার হতাশা প্রকাশ করেছে।
খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়লো এবার নিয়ে মোট পাঁচবার। দুর্নীতির দু’টি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেত্রীকে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ মুক্তি দেয়া হয়েছিল। এরপর দুই বছর ধরে দফায় দফায় তার সাজার মেয়াদ স্থগিত করা হয়।
প্রতিবারই দু’টি শর্ত ছিল - সে অনুযাযী মুক্ত থাকার সময় মিসেস জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। এবারও তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে একই শর্ত দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত থাকার সময় খালেদা জিয়া কয়েক দফায় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে সর্বশেষ টানা ৮১ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর তিনি তাঁর গুলশানের বাসায় ফেরেন গত পহেলা ফেব্রুয়ারি।
সেসময় ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তাঁর লিভার সিরোসিস এবং পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ হওয়ার কথা জানিয়েছিল। তখন তাঁর বিদেশে চিকিৎসার অনুমতির জন্য পরিবার আবেদন করলে সরকার তা নাকচ করেছিল। বিএনপি তাদের নেত্রীর বিদেশে চিকিৎসার অনুমতির জন্য বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচিও পালন করেছিল।
এখন মিসেস জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দর সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতিও চেয়েছিলেন। কিন্তু বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি মেলেনি। মিসেস জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেছেন, সরকারের সিদ্ধান্তে তারা হতাশ হয়েছেন।
অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির যে ধারা অনুযায়ী সরকার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়াচ্ছে, সেই বিধিতে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়া সম্ভব।
তারা মনে করেন “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে আওয়ামী লীগ সরকার খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখছে” । তবে এ অভিযোগ মানতে রাজি নয় সরকার।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, যে বিধি অনুসরণ করে সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়া হয়েছে-একবার এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পর সেই বিধিতে পুরোপুরি মুক্তি দেয়া এবং বিদেশ যেতে দেয়ার সুযোগ নাই।
খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪শে মার্চ। এরআগেই তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আরও ছয় মাস বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে - এর সমর্থনে আইন মন্ত্রণালয় তাদের মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এখন কিছু আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করবে।
খবর : বিবিসি।