গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর শিববাড়ি এলাকায় বাস ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চলন্ত বাস থেকে এক যাত্রীকে সড়কে ফেলে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার বাসের চালক ও চালকের সহকারীকে আজ শুক্রবার সকালে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
জিএমপি সদর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই ) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান, নিহতের পিতা আবু ছাইদ বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। উক্ত মামলায় আসামীদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে জোড়পুকুর পাড় মোড় থেকে তাকওয়া পরিবহনের একটি বাসে সায়েম নামের এক যাত্রী শিববাড়ী মোড়ে আসার জন্য ওঠেন। বাসে হেলপারের সাথে ভাড়া নিয়ে সায়েমের কথা কাটাকাটি হয়। একারণে হেলপার সায়েমকে শিববাড়ী মোড়ে নামতে না দিয়ে তাকে চান্দনা চৌরাস্তার দিকে আরও সামনের দিকে নিয়ে যায়। পরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গেটের অদূরে এশিয়ান ফার্নিচারের দোকানের সামনে পৌঁছে সায়েমকে চলন্ত বাস থেকে সড়কে ওপর ফেলে দেয়। এসময় উক্ত বাসের নীচে পিষ্ট হয়ে সায়েম ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে পুলিশ বাসটি জব্ধ ও বাসের চালক ও চালকের সহকারীকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো জানান, নিহত বাস যাত্রীর নাম মোঃ সায়েম (২০)। তিনি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার আওলাপাড়া এলাকার আবু ছাইদের ছেলে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো বাস চালক মো:সফিকুল ইসলাম (২৬)। তিনি নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানার কুঠিপাড়া এলাকার আব্দুর মাহমুদের ছেলে। চালকের সহকারী মো: হিরা মিয়া (২৭)। তিনি নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ থানার মাগান এলাকার ফরিদ মিয়ার ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান আরো জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, চালকের কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। তিনি লার্ণার (শিক্ষানবিস) লাইসেন্স নিয়ে বাসটি চালাচ্ছিলেন। এছাড়া উক্ত রুটে বাসটি চালানোর কোন রুট পারমিটও ছিল না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তাকওয়া পরিবহণ চালুর পর থেকেই বাসের চালক-হেলপাররা বেপরোয়া। তারা যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে, বেশী ভাড়া আদায় করে। প্রতিবাদ করলেই লাঞ্চিত করে। শিববাড়ী-রাজবাড়ী রুটে ৪০টি বাসের অনুমতি আছে, কিন্তু চলে প্রায় ২৫০টি। এসব দেখার কেউ নেই। তাকওয়ার কারণে নগরীতে যানজট লেগে থাকে। এসব বিষয় জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও আলোচনা হয়েছে। কিন্তু প্রতিকার করার কেউ নেই।
গাজীপুরের বিআরটিএ উপ পরিচালক মো. আবু নাঈম জানান, উক্ত বাসটি গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা থেকে জৈনা বাজার ভায়া চান্দনা চৌরাস্তা রুটে চলাচলের জন্য রুট পারমিট রয়েছে। কিন্তু ঘটনাস্থলের রুটে চলাচলের অনুমতি ছিল না।