গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে বেপরোয়াভাবে চলাচলকারী তাকওয়া পরিবহনের বাস এবার ঢাকা—ময়মনসিংহ মহাসড়কের সড়ক বিভাজকের ওপরে উঠে গেছে। এতে কয়েকজন যাত্রী আহত হলেও অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বাসটির যাত্রীরা।
শনিবার দুপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সদর উপজেলার হোতাপাড়া এলাকায় জয়দেবপুর থানা সংলগ্ন এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সাংবাদিক মাহবুব আলম জানান, শনিবার দুপুরে গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা থেকে জৈনাবাজারগামী তাকওয়ার পরিবহনের একটি বাস বেপরোয়া গতিতে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে হোতাপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকের ওপর উঠে যায়। এতে সড়ক বিভাজকে থাকা লোহার গ্রিল ভেঙে বাসটি থেমে যায়। এসময় তাকওয়ার উক্ত বাসের পেছনে অন্য কোনো যানবাহন না থাকায় বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশের নাওজোর থানার ওসি শাহ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
উল্লেখ্য, গত ৭ জুলাই সকালে গাজীপুর শহরের শিববাড়ি এলাকায় ভাড়া নিয়ে বিতণ্ডার পর তাকওয়া পরিবহনের বাস থেকে এক যুবককে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ বাসের চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করে। পরে চালকের সহকারি আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে। উক্ত বাসটিও আটক করা হয়েছে। জানা গেছে আটককৃত বাসটির উক্ত রুটে চলাচলের অনুমতি ছিল না এবং চালক লার্নার লাইসেন্স নিয়ে বাসটি চালাচ্ছিলেন।
গাজীপুর বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, তাকওয়া পরিবহনের নামে গাজীপুর মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় মোট ছয়টি রুটে প্রায় আড়াইশো-র মতো বাস চলাচলের জন্য অনুমতি নিয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ রুট লাভজনক না হওয়ায় তাকওয়া পরিবহনের বাসগুলো কালিয়াকৈর চন্দ্রা বা শ্রীপুরের জৈনাবাজার থেকে গাজীপুর মহানগরীর জয়দেবপুর চৌরাস্তা হয়ে শিববাড়ি-আমতলী রুটে বেশিরভাগ সময় চলাচল করে।
শিববাড়ি-আমতলী রোডে চলাচলকারী তাকওয়া পরিবহনের অধিকাংশ বাসের রুট পারমিট নেই। অধিকাংশ চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। অনুমোদনহীন ও অদক্ষ চালক দিয়ে তাকওয়া বাস চলাচল বন্ধের জন্য গাজীপুর জেলা আইনশৃংখলা সভায় বিভিন্ন সময়ে দাবি জানানো হলে জেলার সকল সড়ক মহাসড়কে সকল প্রকার অন অনুমোদিত ও অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে এসব বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান গণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। মাইকিং করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো এখনো তা চলছে এবং একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। গাজীপুর শহরের যানজটের জন্য এসব তাকওয়া পরিবহনকে দায়ি করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে নতুন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম মতবিনিময় কালে জানিয়েছেন, সকলের সহযোগিতায় এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হবে।