গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ এর যৌথ উদ্যোগে মহানগরীর শিববাড়ী-রাজবাড়ী-আমতলী সড়কের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণের লক্ষে ৬ষ্ঠ দিনের মতো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। ৬ষ্ঠদিনে সোমবার অননুমোদিত রোডে তাকওয়া পরিবহণের যাত্রীবাহি বাস চলাচলের অভিযোগে ৭টি বাস আটক করা হয়। পরে প্রতিটি বাসের চালককে এক হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া তাদের মধ্যে ৬ জন চালককে ১৫ দিনের একং বয়স বেশী থাকায় একজন চালককে ৬ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া উক্ত ৭টি বাস ডামপিং করার আদেশ দেয়া হয়েছে। তারপরেও অননুমোদিত রোডে তাকওয়া পরিবহণের বাস চলাচল থামছেই না।
গাজীপুর বিআরটিএ‘র পরিদর্শক মোঃ নুরুল হোসেন জানান, সোমবার মহানগরীর শিববাড়ী-রাজবাড়ী-আমতলী সড়কের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিন হালদার। এ সময় উক্ত রোডে চলাচলের রোড পারমিট না থাকা সত্বেও অননুমোদিত সড়কে চলাচলের অপরাধে তাকওয়া পরিবহনের ৭টি বাস আটক করে চালকদের উক্ত দন্ড দেয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো, জাকির হোসেন (২৭), মোঃ আব্দুল মালেক (৩৫), আক্কাস আলী (৪৫), মোঃ ফরিদুল ইসলাম (২৪), মোহাম্মদ আলী (৪৩), আবুল (৪০) এবং আবুল কালাম (৫০)।
তিনি আরো জানান, মহানগরীর যানজট নিরসনের জন্য বিভিন্ন রোডে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে গত ১৭ জুলাই থেকে জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ এর যৌথ উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু হয়। অভিযানে অননুমোদিত রোডে চলাচলের অপরাধে তাকওয়া পরিবহণের সর্বমোট ১৯টি বাস আটক করে ডামপিং করা হয়েছে। এসব বাসকে ৭৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। উক্ত বাসের চালকদের মধ্যে সোমবার ৭জন চালককে এবং ১৯ জুলাই ১ জন চালককে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
গাজীপুর বিআরটি সূত্রে জানা গেছে, তাকওয়া পরিবহনের নামে গাজীপুর মহানগরসহ জেলার মোট ছয়টি রুটে প্রায় আড়াইশো-র মতো বাস চলাচলের জন্য অনুমতি নিয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ রোড লাভজনক না হওয়ায় তাকওয়া পরিবহনের বাসগুলো কালিয়াকৈর চন্দ্রা বা শ্রীপুরের জৈনাবাজার থেকে গাজীপুর মহানগরীর জয়দেবপুর চৌরাস্তা হয়ে শিববাড়ি-রাজবাড়ী-আমতলী রুটে বেশিরভাগ সময় চলাচল করে। কিন্তু এ রুটে চলাচলকারী তাকওয়া পরিবহনের অধিকাংশ বাসের রোড পারমিট নেই। অধিকাংশ চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। অনুমোদনহীন ও অদক্ষ চালক দিয়ে তাকওয়া বাস চলাচল বন্ধের জন্য গাজীপুর জেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় বিভিন্ন সময়ে দাবি জানানো হলে জেলার সকল সড়ক মহাসড়কে সকল প্রকার অন অনুমোদিত ও অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে এসব বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান গণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। মাইকিং করা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো এখনো তা চলছে এবং একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের মেম্বারবাড়ী এলাকায় তাকওয়া পরিবহনের একটি বাস বেপরোয়া গতির বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে একটি দোকানে উঠে যায়। ১৬ জুলাই গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা থেকে জৈনাবাজারগামী তাকওয়ার পরিবহনের একটি বাস বেপরোয়া গতির বাস হোতাপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকের ওপর উঠে যায়। গত ৭ জুলাই সকালে গাজীপুর শহরের শিববাড়ি এলাকায় ভাড়া নিয়ে বিতণ্ডার পর তাকওয়া পরিবহনের বাস থেকে এক যুবককে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ বাসের চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করে। পরে চালকের সহকারি আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে।