গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কালীগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে নিজ ঘরে প্রবাসীর স্ত্রী হত্যার রহস্য উদঘাটন করলো ও আসামী গ্রেফতার করলো গাজীপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নিহতের নাম নাজমা বেগম (৪০)। তিনি গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার চৈতারপাড়া এলাকার মোমেন মির্জার স্ত্রী। মোমেন ও তার দুই ছেলে সৌদি প্রবাসি।
গ্রেফতার আসামী হলো মোঃ পনির (৪০)। তিনি একই এলাকার মৃত ইউনুস আলীর ছেলে।
গ্রেফতারের পর আসামী পনির সহযোগী আসামীদের নাম প্রকাশ করে ভূমিকা বর্ণনা করে গত বুধবার বিকালে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
গাজীপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বৃহস্পতিবার বিকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, নাজমা বেগমের দুই ছেলে ও স্বামী সৌদি প্রবাসি। একারণে তিনি কারণে এক ছেলে স্বপন মির্জাকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করতেন। ঘটনার দিন ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সিাড়ে ৭টার দিকে স্বপন মির্জা বাড়ীর পাশে ওয়াজ মাহফিলে যান। দেড় ঘন্টা পর স্বপন মির্জা বাড়িতে ফিরে এসে বসত ঘরের খোলা দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে নাজমা বেগমকে খাটের উত্তর পাশে শোকেজের সামনে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেন। পরে আশেপাশের লোকজনের সহযোগিতায় নাজমা বেগমকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঢাকায় রেফার্ড করেন। ঢাকা নেয়ার পথে নাজমা বেগম মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় স্বপন মির্জা বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানার মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো জানান,মামলাটি কালীগঞ্জ থানা প্রায় ০৩ মাস তদন্ত করে কোনো রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় মামলাটি পিবিআই গাজীপুর জেলাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক(নিঃ) মোঃ রফিকুল ইসলাম তদন্ত করেন।
তদন্তকালে উক্ত আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, আসামী মোঃ পনিরের স্ত্রী প্রবাসী হবার কারণে বিদেশ থেকে টাকা পয়সা পাঠাতেন। উক্ত টাকা গ্রেফতারকৃত আসামী পনির তার প্রতিবেশী ও নিকট আত্মীয় নাজমান নিকট জমা রাখতেন। এতে করে উভয়ের মধ্যে টাকা পয়সা লেনদেনকে কেন্দ্র করে ডিসিষ্ট ও আসামী পনির এর মধ্যে একটি ঘনিষ্ট সম্পর্ক তৈরী হয়। ঘটনার কিছুদিন পূর্বে টাকা পয়সা লেনদেনকে কেন্দ্র করে পনির এর সাথে নাজমার মনোমালিন্য শুরু হয়। মামলার ঘটনার এক সপ্তাহ আগে ডিসিষ্ট নাজমা আসামী পনির এর ছেলে সোহেলকে নিয়ে ওয়াজ মাহফিলে যেতে চাইলে পনির নিষেধ করায় দুজনের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উপস্থিত লোকজনের সামনে পনিরকে চড় মারে। এতে আসামী মোঃ পনির চরম অপমানিত বোধ করে। এছাড়াও অন্য আসামীদের সাথে জমি জমা নিয়ে নাজমার বিরোধ ছিল। এসব কারণে আসামীগণ একত্র হয়ে নাজমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন খালি বাড়ীতে একা পেয়ে আসামীরা নাজমাকে লাঠির ও রড দিয়ে মাথায় ও শরেীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথারি বাড়ি দেয়। নাজমা নিস্তেজ হয়ে গেলে আসামীগণ ঘরের শোকেজ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়ে চলে যায়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, ঘটনায় জড়িত সকল আসামীরা পরস্পর আত্মীয় প্রতিবেশী। টাকা পয়সা লেনদেন ও জায়গা জমি, সীমানা ইত্যাদি নিয়ে নাজমার সাথে পূর্ব শত্রুতা ছিলো। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামীরা ডিসিষ্টকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। আসামী পনির সহযোগী আসামীদের এ মামলার ঘটনায় ভূমিকা বর্ণনা করে বুধবার বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।