গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) চার বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উড়ানোর জন্য আনা গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে কলকাতার কমেডি শো মিরাক্কেল এর অভিনেতা ও পুলিশের সদস্যসহ ৫জন দগ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার বিকালে গাজীপুর পুলিশ লাইনসে এ ঘট্না ঘটেছে।
দগ্ধরা হলেন, কলকাতার কমেডি শো মিরাক্কেল এর কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনি (৩০), পুলিশের কনস্টেবল মোশারফ হোসেন, রুবেল মিয়া, জিল্লুর রহমান ও ইমরান হোসেন। এদের মধ্যে রনি নাটোরের সিংড়া থানাধীন বিলদহ এলাকার মৃত আব্দুল লতিফ খানের ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের চতুর্থ তিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার গাজীপুর পুলিশ লাইনস মাঠে নাগরিক সম্মেলন ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। এসময় ঘটনাস্থলের পাশেই মঞ্চে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আমন্ত্রিত অতিথিগণ উপস্থিত ছিলেন। গাজীপুর পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ আখতার হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন আইজিপি ড.বেনজির আহমেদ।।
এছাড়াও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গাজীপুর সিটির ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানসহ বিপুল সংখ্যক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানায়, গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) চার বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চের বাইরে উদ্বোধন মঞ্চ স্থাপন করা হয়। শুক্রবার বিকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে উদ্বোধন মঞ্চ ওঠে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এসময় মূল্য মঞ্চের পশ্চিমপাশে অনেকগুলো আতশ বাঝি ফোটানো হয়। আতশবাঝি ফোটানোর সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আমন্ত্রিত অতিথিগণ পায়ড়া উড়িয়ে দেন। তারপরে জিএমপি চার বছর পূর্তি লেখা একটি প্ল্যাকার্ডসহ অনেকগুলো গ্যাস বেলুন একসাথে ওড়ানোর চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু বেলুনগুলো আকাশে ওড়েনি। পরে অতিথিগণ বেলুন না উড়িয়েই সেখান থেকে মূল মঞ্চের সামনে নির্ধারিত আসন গ্রহণ করেন।
তারা আরো জানান, পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য বেলুন বিক্রেতাকে ডেকে বেলুন না ওড়াতে ধমক দেন। তখন বেলুন বিক্রেতা নিজেই বেলুনগুলো ওড়ানোর চেষ্টা করেন। এসময় তিনিসহ অন্যরা বেলুনগুলো বাধন খুলে আলাদা করতে চান। তখন কেউ একজন আগুন দিয়ে বেলুনের সুতা পোড়ানোর জন্য গ্যাস ম্যাচ দিয়ে আগুন জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। কিন্তু আতশবাঝির শব্দের কারণে অনেকেই বেলুন বিস্ফোরণের ঘটনাটি বুঝতে পারেননি। বেলুনের বিস্ফোরণের সময় পাশে থাকা কৌতুক অভিনেতা আবু হেনা রনিসহ পাঁচজন দগ্ধ হন। তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ সদস্যরা তাঁদের গায়ে পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে দ্রুত তাঁদের গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা: মনিরা আক্তার জানান, অভিনেতা আবু হেনা রনির শরীরের ৪০ ভাগ, মোশাররফ হোসেনের ৩০ ভাগ ও অন্য ব্যক্তিরা ২০ ভাগ দগ্ধ হয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তিনজনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা: রফিকুল ইসলাম জানান, ৫ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আবু হেনা রনি, মোশারফ ও রুবেল মিয়াকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (হেড কোয়ার্টার) মো: ইলতুৎমিশ বেলুন বিস্ফোরণে ঘটনা স্বীকার করেন। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।
এ বিষয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-মিডিয়া) মাহবুবুর রহমান বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উড়ানোর জন্য আনা বেলুন না ওড়ায় অতিথিগণ মঞ্চে চলে আসেন। পরে বেলুন কেন উড়ছিল না তা দেখার জন্য গ্যাস ম্যাচের আগুন দিয়ে তাতে আগুন ধরে যায়। এসময় আতশ বাঝির শব্ধের কারণে অনেকে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে মনে করেছেন। তিনি বলেন, এটা তেম বড় কোন ঘটনা নয়, খুবই মাইনর একটি বিষয়।