নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপাসিয়া (গাজীপুর):
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। দখলে-দূষণে নদীগুলো আজ বিলীন হওয়ার পথে। প্রাকৃতিকভাবে খাল বিল নদী নালাতে যে পরিমাণ পানি প্রতি বছর জমা হয় তার ৮ শতাংশ আমরা ব্যবহার করতে পারি। অবশিষ্ট পানি সাগরে চলে যায়। ভূপৃষ্ঠের ১২ শতাংশ পানি যদি আমরা সঞ্চয় করে রাখতে পারি, তাহলে দেশের পানির চাহিদা মেটানো সম্ভব।
রোববার দুপুরে বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার।
এ বছর প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে বিশ্ব নদী দিবস উদযাপন করার লক্ষে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় রাজধানী থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দুরে গাজীপুরের কাপাসিয়ার দুর্গাপুর ইউনিয়নের শীতলক্ষ্যা, ব্রহ্মপুত্র ও কালীগঙ্গা নদের মোহনায় জেগে ওঠা ধাঁধার চরে বিশ্ব নদী দিবসের প্রধান আলোচনা সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজানুর রহমান,পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. ফজলুর রশিদ,পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম গোলাম মোর্শেদ খান ও সহকারী কমিশনার ভূমি নাজমুল হুসাইন।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, পৃথিবীর সকল সভ্যতার বিকাশ সূচিত হয়েছে নদী কেন্দ্রিক নগর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। অথচ আধুনিক সময়ে এসে মানুষ নিজের আনন্দ ও সুখ শান্তির জন্য প্রতিনিয়ত প্রকৃতিকে ধ্বংস করে চলেছে। আর পৃথিবীর জীব বৈচিত্র ও প্রকৃতির সাথে অমানবিক আচরণের কারণে পৃথিবীব্যাপী ব্যাপক প্রাকৃতিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে, যা আমরা প্রতিনিয়ত সারা পৃথিবীতে লক্ষ করছি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত পানি ধারণ উপযোগী খাল, বিল, নদী, নালা, হাওর, বাওড়গুলোকেও নিজের স্বার্থে আমরা নষ্ট করে ফেলছি। অথচ আমাদের অস্তিত্ব তথা জীবন, মৃত্যু, খাদ্য উৎপাদন ও সুপেয় পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে এগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। তাই এগুলো দূষণ ও দখলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সারাদেশের ৪৩ হাজার দখলদারের মাঝে ২৩ হাজার দখলদারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিন নদ-নদীর মোহনায় চারপাশে জলরাশির মাঝখানে ছোট দ্বীপে বেড়ে ওঠা গাছগাছালির সবুজ ছায়ায় আয়োজিত ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠান অংশগ্রহণকারী সকলকে বিমোহিত করে।