গণবাণী ডট কম:
বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদী এবং টেকসই সমাধানের জন্য তারা বাংলাদেশ, মিয়ানমার, অন্যান্য আঞ্চলিক অংশীদার ও বিস্তৃত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তবে ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা বাংলাদেশের পাশে থাকব।’ হাইকমিশনার জানান, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও অন্যায় কাজের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া জাতিসংঘের রেজুলেশন ও জবাবদিহিতা আদায় কার্যক্রমে শক্তভাবে সমর্থন দিয়ে যাবে।
মঙ্গলবার রাজধানীতে কসমস সংলাপের অ্যাম্বাসেডর লেকচার সিরিজের আওতায় ‘বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্ক: ভবিষ্যতের জন্য পূর্বাভাস’শীর্ষক এক সংলাপে হাইকমিশনার এসব কথা বলেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ী গোষ্ঠী কসমস গ্রুপের জনহিতকর সংস্থা কসমস ফাউন্ডেশন রাজধানীর সিক্স সিজন হোটেলে এ সংলাপের আয়োজন করে।
হাইকমিশনার আরো বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘দৃঢ়ভাবে’কাজ চালিয়ে যেতে থাকবে এবং ভবিষ্যতে দুদেশের মধ্যেকার সহযোগিতার সম্পর্ক আরো জোরদারের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এমন আরো অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে কাজ করতে পারে।’
হাইকমিশনার বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যৎ সম্পর্ককে সংক্ষেপে তিনটি শব্দ দিয়ে ব্যাখ্যা করেন। সেগুলো হলো- প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা, বাস্তবসম্মত ও জনবান্ধব (উদ্যোগ)।
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (আইএসএএস) প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান।
সংলাপে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, কানাডার হাইকমিশনার বেনোইট প্রিফোনতাইনে, ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়াও তাবাজারা ডি অলিভিয়েরা জুনিয়র, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী ও মো. তৌহিদ হোসেন, ব্যবসায়ী নেতা সালাউদ্দিন কাশেম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংলাপে আন্তর্জাতিক বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা রোহিঙ্গা সঙ্কট, অভিবাসন ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিশ্বব্যাপী ইস্যুতে আলোকপাত করা ছাড়াও বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগিতা আরও গভীর করার উপায়গুলো তুলে ধরেন।
বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া প্রথম দিকের দেশগুলোর একটি ছিল অস্ট্রেলিয়া এবং গত দশকগুলো ধরে দুদেশের মধ্যে ভালো ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে এবং তা ক্রমবর্ধমান রয়েছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নতির পথে রয়েছে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে টেকসই প্রবৃদ্ধির ফলে দুদেশের মধ্যকার বাণিজ্য ২০০ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
বাংলাদেশি পণ্য ২০০৩ সালের ১ জুলাই থেকে অস্ট্রেলিয়ায় শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাচ্ছে। সেই সাথে বাংলাদেশ জ্বালানি, টেলিকম, পরিবহন, বস্ত্র, শিক্ষা ও খনি খাতে অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানিগুলোকে বাণিজ্যিক সুযোগ দিচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থা হাজারো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর জন্য তৃতীয় সর্বোচ্চ জনপ্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন এবং তাদের সংখ্যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাড়ছে।