শ্রীপুর (গাজীপুর) সংবাদদাতা :
গাজীপুরের শ্রীপুরে ১২ বিঘা বনভূমি দখল করে বাড়িঘর ও কিন্ডার গার্টেন নির্মাণ করে ভোগ দখলে থাকা
বন বিভাগের জমি ফিরিয়ে নিতে দখলকার নিজে আবেদন করেছেন। গাজীপুরের শ্রীপুর সদর বিটের বেড়াইদেরচালা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করা জমির মামলায় আদালত বন বিভাগের পক্ষে রায় দেয়ায় তা উদ্ধার করে নেয়ার আবেদন জানিয়েছেন দখলকারীরা। গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ৭নং কেওয়া মৌজা এলাকায় ওই জমির পরিমান ৪ একর ৬ শতক।
দখলে থাকা পরিবারের পক্ষ থেকে এস এম আবুল কালাম আজাদ ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার (ডিএফও) কাছে জমি উদ্ধার করে নেয়ার আবেদন করেন। ওই আবেদনের অনুলিপি গাজীপুরের বিভিন্ন সরকারী দপ্তরেও দেয়া হয়েছে।
আবেদন থেকে জানা গেছে, মহান স্বাধীনতার পর থেকে এস এম আবুল কালামের পূর্ব পুরুষগণ কেওয়া মৌজার সিএস ও এসএ ৯৩৩ নং দাগের ৪ একর ৬শতক জমি ভোগ দখল করে আসছিলেন। পরে দখলীয় জমি বন বিভাগের বলে জানতে পেরে ওই পরিবারের লোকজন গাজীপুর জেলা আদালতে দখলস্বত্বে (মালিকানা নিশ্চিত হওয়ার জন্য) একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিজ্ঞ আদালত বন বিভাগের পক্ষে রায় প্রদান করেন। ওই ভোগ দখলীয় জমির মালিক বন বিভাগ। এরপর থেকে দখলকারী পক্ষের মধ্যেও বন বিভাগের ওই জমি ফিরিয়ে দেয়া না দেয়া নিয়ে মতানৈক্য দেখা দেয়। ওই পরিবারের মধ্যে প্রায়ই এ নিয়ে বাকবিতন্ডা দেখা দেয়। সুষ্ঠু সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবেশ রক্ষার্থে ওই পরিবারের পক্ষে এস এম আবুল কালাম আজাদ ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার (ডিএফও) কাছে জমি উদ্ধার করে নেয়ার আবেদনটি করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা (ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ২নং সিএন্ডবি) সংলগ্ন ৭নং কেওয়া মৌজার সিএস ও এসএ ৯৩৩ নং দাগের বনভূমি। সেখানে শামসুল হকের আধা পাকা ৩টি, টিন শেড ২টি ও একটি মাটির ঘর রয়েছে। যা, ভাড়া দেওয়া হয়েছে। দুই বিঘা জমির উপর একটি পুকুর রয়েছে ও বনের খোলা জায়গায় গড়ে উঠেছে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত “শতদল শিশু একাডেমি”। উত্তর পাশে মাজহারুল ইসলাম নামে একজন বনের জমি দখল করে আধা পাকা ৫টি ও টিন শেডের ৩টি ঘর নির্মাণ করেছেন। আরও দুটি পাকা ঘরের নির্মাণ কাজ চলছে। অবশিষ্ট খালি জায়গা বাগান সৃজনসহ নানাভাবে দখলের পাঁয়তারা চলছে।
এলাকাবাসী জানান, দখলকারী শামসুল হকের ছেলে শাহীন শতদল স্কুলটি গড়ে তুলেন। বনভূমিতে তাদের পাঁচটি বাড়ি ও একটি পুকুর রয়েছে। তারা আরও জানান, দখলীয় ভূমির স্থানীয় বাজারমূল্য অন্তত ১০ থেকে ১৩ কোটি টাকা।
এ ব্যাপারে দখলকারী শামসুল হক জানান, আমার বাব-দাদা এসব জমি ভোগ করেছে। সেই সূত্রে আমিও ভোগ দখল করে আছি। পারিবারীক কারণে তিনি বনভ’মির জমি ফিরিয়ে নেয়ার জন্য বনবিভাগের নিকট আবেদন করেছেন।