গণবাণী ডট কম:
নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামের নুহাশ পল্লীতে আজ ১৩ নভেম্বর বুধবার জনপ্রিয় লেখক, কথা সাহিত্যিক ও নাট্যকার হুমায়ুন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন পালন করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এদিনটি উদযাপন করে হুমায়ুনের পরিবার সদস্য, ভক্ত ও নুহাশ পল্লীর কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
গেল রাত ১২ টা ১মিনিটে নুহাশ পল্লীর সকল স্থাপনায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করার মধ্য দিয়ে নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমদের জন্মদিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সকাল থেকেই আসতে থাকেন হুমায়ুন ভক্তরা। হুমায়ূন আহমেদের হাতে গড়া নুহাশ পল্লীতে এবারের জন্ম দিনে দিবসটি পালন উপলক্ষে লেখকের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। পরে সকলকে নিয়ে কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করা হয়। সকালে সকালে প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, তাদের দুই ছেলে নিশাদ ও নিনিতসহ স্বজন ও ভক্তদের নিয়ে নুহাশ পল্লীতে লেখকের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। পরে সকলকে নিয়ে কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করা হয়।
গাজীপুরের নূহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মেহের আফরোজ শাওন বলেন, নূহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদ যাদুঘর নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে এই যাদুঘরের স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। আমি যেহেতু স্থপতি তাই আমি নিজে একটি ডিজাইন করেছি। সকলের সম্মতি পেলে যে কোন সময় এ কাজ শুরু করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে হুমায়ুন আহমেদ ক্যান্সার হাসপাতাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি দুর্ভাগ্যবান যে, আমি এতবড় দায়িত্ব এক নিতে পারছি না। একটু একটু করে আগানোর চেষ্টা করছি, ছোট কাঁধে যতটুক সম্ভব চেষ্টা করেছি, ক্যান্সার হাসপাতালটি আসলে আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। এসময় তিনি বলেন, আমি বলছি না ক্যান্সার হাসপাতাল আর্থিক কারণে হচ্ছে না। এটার উদ্যোগটা নিলে একটু একটু করে অর্থ সংখুলান হয়ে যাবে এটা আমি বিশ্বাস করি। উদ্যোগটা নেয়া আসলে বড় ব্যাপার, যেটা আমি একা নিতে পারছি না। হুমায়ুন আহমেদ যে ক্যান্সার হাসপাতাল করতে চেয়েছিলেন, সে স্বপ্নটা অনেক বড়, পরিবারের সবাইকে আসলে একম হয়ে এটা শুরু করতে হবে। আর উদ্যোগটা নিতে হবে। আমি হুমায়ুন আহমদের পরিবারের সকলকে বিষয়টি জানিয়ে রেখেছি, পরবিারের সবার সম্মতির অপেক্ষা করছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই আমরা সম্মতি পাব। সবার সম্মতি পাওয়া গেলে ক্যান্সার হাসপাতাল বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। সবার সম্মতি ছাড়া এটা বাস্তবায়ন সম্ভব না।
দূর দুরান্ত থেকে আগত হুমায়ূন ভক্তরা বলেন, হুমায়ূন আহমেদে ছিলেন লেখকদের মধ্যে একটি নক্ষত্র। এ নক্ষত্রের আলোয় উদ্ভাসিত হোক বাংলাদেশ লক্ষ কোটি মানুষ। তিনি না থেকেও আমাদের মাঝে রয়েছেন। সারা দেশেই রয়েছে তার অসংখ্য ভক্ত। তাদের কেউ কেউ এখানে এসে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। তারা বলছেন, শুধু আজকের দিনে নয়, ভক্তরা হুমায়ুনকে সারাবছরই স্মরণ করে।
ভক্তরা মনে করেন, হুমায়ুন আহমেদ তার সৃষ্টির মধ্যে, প্রকৃতি, জোছনা ও বৃষ্টির মধ্যে ছিলেন, আছেন ও বেঁচে থাকবেন।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগহণ করেন হুমায়ুন আহমেদ। দূরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই তিনি মৃত্যু বরণ করেন। এরপর গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে তাকে সমাহিত করা হয়।