গণবাণী ডট কম:
বাংলাদেশে যখন চাহিদার তুলনায় বাজারে সরবরাহ কমে গেলে দাম বেড়ে যায়, লোকজন মজুদ করার জন্য আরো সংকট তৈরী করে, ব্যবসায়ীরা মজুদ করে, তখন জাপানের এক মুলা চাষীর একটি ঘটনা বাংলাদেশের মানুষের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে পড়েছে। নেট থেকে সংগৃহীত ঘটনাটির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে এর শিক্ষণীয় দিকটির কথা বিবেচনায় রেখে ঘটনাটি পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো:
মুলা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন একজন কৃষক। ক্ষেতের অর্ধেক মুলা বিক্রি করতেই কাঙ্খিত লাভ উঠে আসে। তাই কৃষক সিদ্ধান্ত নিলেন বাকী অর্ধেক বিক্রি না করে জমি সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিবেন। যাতে সবাই ফ্রিতে প্রয়োজনমতো নিতে পারে। কিন্তু দেখা গেলো কেউ একটির বেশি মুলা নিচ্ছে না। কারণ কারো এর অতিরিক্ত প্রয়োজন নেই।
ফেসবুকে এমনি একটি অভূতপূর্ব ঘটনার বর্ণনা দিলেন জাপানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি একজন শিক্ষার্থী। মাহবুব খান নামের ওই বাংলাদশি শিক্ষার্থী তার টাইমলাইনে লিখেন, ‘জাপানে আজ সকাল বেলায় নেরিমা সিটিতে ঘুরতে গিয়ে নতুন এক অভিজ্ঞতা হল। কৃষক এবার অর্ধেক জমির দাইকন (মুলা) বিক্রি করে যথেষ্ট লাভবান হয়েছেন তাই বাকি অর্ধেক জমি সবার জন্য ফ্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু কাউকে একটির বেশি মুলা নিতে দেখিনি। আমি প্রশ্ন করেছিলাম মাত্র ১টি নিচ্ছেন কেন? জবাবে তারা বললো অন্য লোকদের নেয়ার সুযোগ দিতে চাই। উল্লেখ্য, এখানে মুলার স্বাদ এবং দাম সারা বছর একই থাকে যা প্রতি পিস ১০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়, কৃষকের অতিরিক্ত মুনাফা কিংবা লোকসানের সুযোগ এখানে নেই বা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি কিংবা প্রাকৃতিক দূর্যোগেও মূল্য বৃদ্ধির সুযোগ নেই।’
একটু ভাবুন, এমন চিত্র কি বাংলাদেশে কল্পনা করা যায়?! বাংলাদেশের অধিকাংশ কৃষকই দরিদ্র। প্রায়ই তাদের লোকসান গুনতে হয়। তাই হয়ত লাভবান হলেও এভাবে জমি ফ্রী করে দেয়ার সুযোগ তাদের নেই। কিন্তু দেশে ধনী কৃষকও যে নেই তা কিন্তু নয়। কোন ধনী কৃষক কি এমন উদারতা দেখান?
আর ভাবুন, এভাবে জমি উন্মুক্ত করে দিলে কেউ কি অন্যদের কথা বিবেচনা করে যতটুকু প্রয়োজন তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে? সাধ্যমত যে যতটুকু পারবে, খেতে না পারলে বাড়ি নিয়ে ফেলে দিবে- সম্ভবত অধিকাংশের ক্ষেত্রে এমনটাই ঘটবে।