গণবাণী ডট কম:
আজ বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস। এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় “তামাক কোম্পানির কূটচাল রুখে দাও, তামাক ও নিকোটিন থেকে তরুণদের বাঁচাও”।
প্রতি বছর বিশ্বে তামাকের কারণে ৮০ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। এর মধ্যে শুধু বাংলাদেশেই তামাক ব্যবহার জনিত রোগে বছরে ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষ মারা যায়। তামাক কোম্পানির কাছে এই মৃত্যুর অর্থ তাদের ভোক্তা হারানো। আর তখন তারা শূন্যতা পূরণে তারা টার্গেট করে শিশু-কিশোর ও তরুণদের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, যারা কিশোর বয়সে ধূমপানে আসক্ত হয়, তাদের অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা স্বাভাবিকের তুলনায় তিনগুণ, গাঁজায় আটগুণ এবং কোকেইনের ক্ষেত্রে ২২ গুণ বেশি। অর্থাৎ তামাক ও নিকোটিন কেবল একটি আসক্তিই নয়, এটি তরুণদের আরও অনেক বিধ্বংসী আসক্তির পথে পরিচালিত করে।
ইউএস সার্জন জেনারেল রিপোর্ট-২০১৪ অনুযায়ী, প্রায় ৯০ শতাংশ সিগারেট ধূমপায়ী ১৮ বছর বয়সের মধ্যে প্রথমবার ধূমপান করেন। অল্প বয়সে তামাকপণ্যে আসক্ত হয়ে পড়লে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে এবং বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ফুসফুসের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। ফুসফুস ক্যান্সার, হৃদরোগ, অকাল বার্ধক্য, মানসিক অস্থিতিশীলতাসহ নানাবিধ রোগ সৃষ্টি হয় তামাকের কারণে।
তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) শনিবার (৩০ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বছরের পর বছর ধরে তামাক এবং অন্যান্য নিকোটিন পণ্যে শিশু-কিশোর-তরুণদের আকৃষ্ট করতে অত্যন্ত কৌশলী ও আগ্রাসী প্রচারণা চালিয়ে আসছে তামাক কোম্পানিগুলো।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, ধূমপান, তামাক ও ভ্যাপিং পণ্য ব্যবহারে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। মানুষের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের পথ সুগমে তামাকপণ্য নিয়ন্ত্রণ এবং তামাক কোম্পানির সব কারসাজি বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, কর ও মূল্য সংক্রান্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে তামাকপণ্যের দাম বৃদ্ধি, তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ মোকাবেলায় খসড়া এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫ দশমিক ৩ নীতিমালা চূড়ান্তকরণ ও বাস্তবায়ন, তামাকপণ্যের মোড়কে আইন অনুযায়ী সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা মুদ্রণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তামাক কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে বিক্রয়স্থলে প্রোডাক্ট ডিসপ্লের মাধ্যমে তামাকপণ্যের প্রচার বন্ধ এবং জনসমাগম ও পরিবহনে “ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান” বিলুপ্ত করতে হবে।