গণবাণী ডট কম:
দেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, আজ শনিবারের মধ্যেই উত্তর আন্দামান সাগর এবং আশেপাশের এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। এরপর সেটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে আগামী বুধবার নাগাদ উডিষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আফতাবউদ্দিন শনিবার সকালে গণমাধ্যমকে বলেন, ”আমরা (পরিস্থিতির দিকে) নজর রাখছি। আজকের মধ্যেই সেখানে একটি লঘুচাপ তৈরি হবে বলে আমরা ধারণা করছি। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এটির নাম হবে ‘ইয়াশ’।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী এই নামটি প্রস্তাব করেছে ওমান। এর অর্থ ‘হতাশা’।
ঘূর্ণিঝড়ের এই সতর্কবার্তা এমন সময়ে এলো, যখন বাংলাদেশের অনেক এলাকায় মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে খুলনায়, ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস -আর সবচেয়ে কম সৈয়দপুরে, ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, ইয়াশ সুপার সাইক্লোন হয়ে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। সেজন্য পুরো উপকূলীয় এলাকায় সতর্কতা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। শনিবার (২২ মে) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, এটি এখন পর্যন্ত লঘুচাপ হয়ে আছে, এখনই আতঙ্ক কিংবা শঙ্কার কিছু নেই। তবে অন্যান্য বারের মতো এটা সুপার সাইক্লোন হয়ে আঘাত হানতে পারে। আরেকটা বিষয় হলো, ঘূর্ণিঝড় এগোনের সময় প্রতি মুহূর্তে দিক পরিবর্তন করে। দিক পরিবর্তনের সঙ্গে-সঙ্গে নতুন নতুন এলাকা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। সেজন্য আমরা আমাদের পুরো উপকূলকে সতর্ক করব, প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি এখন লঘুচাপ অবস্থায় আছে। আগামীকালকের মধ্যে সুস্পষ্ট লঘুচাপ হবে, এরপর ২৩ থেকে ২৪ মের মধ্যে নিম্নচাপ হবে। নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় হবে। ২৬ মে ভূমিতে আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভূমিতে ওঠার সময় এর গতিবেগ হবে ১২০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার। এটা বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের আন্দামান নিকোবর দীপপুঞ্জের কাছাকাছি আছে।
এখন পর্যন্ত এর ডিরেকশন ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের দিকে। এটি যে অবস্থায় আছে, সেখান থেকে যদি সোজাসুজি আসে তবে আমাদের খুলনা বিভাগ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এটা জানার পর আমরা আবহাওয়া অধিদফতরের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা করেছি, বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আজকে প্রস্তুতি সভা দিয়েছি। বিকেল প্রস্তুতি সভার পর মাঠ প্রশাসনে আমাদের নির্দেশনা পাঠিয়ে দেব। ইতিমধ্যে সিপিপি ভলান্টিয়ারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রচার কাজ শুরু হচ্ছে।