গণবাণী ডট কম:
মরামারি করোনাকালে ভালো নেই গাজীপুর মহানগরীর ভাওয়াল রাজবাড়ি ও আশপাশের এলাকার পত্রিকার হকাররা। করোনা মহামারির কারণে সংবাদপত্রের গ্রাহক ও পাঠক সংখ্যা কমে যাওয়ায় স্থানীয় অর্ধশত হকারের আয়ও কমে গেছে। এসব কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সকলের ঘুম ভাঙ্গার আগেই মানুষের দ্বারে দ্বারে খবরের কাগজ পৌঁছে দেয়া হকারদের খবর নেয়না কেউ। তারা অনেক কষ্টে জীবিকা নির্বাহ করছেন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন হকার।
আজ রবিবার সকালে সরেজমিনে মহানগরীর পৌরসুপার মার্কেট, চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় পত্রিকা বিলি করার সময় হকারদের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের মানবেতর জীবন সংগ্রামের কথা।
পৌর সুপার মার্কেট এলাকার হারুন পেপার হাউজের মালিক মো: হারুন অর রশিদ বলেন, করোনা মহামারি শুরু হওয়ার আগে জয়দেবপুর শহর ও আশপাশের এলাকায় ৪৯ জন হকার প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি পত্রিকা বিলি করতেন। ফলে তখন তাদের আয়ও অনেক বেশী ছিল। কিন্তু করোনার কারণে বর্তমানে এসব এলকায় পত্রিকার গ্রাহক সংখ্যা প্রায় অর্ধেক কমে গেছে।
তিনি আরো জানান, করোনা শুরুর পর পত্রিকার মাধ্যমে করোনা ছড়াতে পারে এমন প্রচারণার কারণে অনেক গ্রাহক পত্রিকা রাখা বন্ধ করে দেয়। মহানগরীর বিভিন্ন সরকারি অফিসে দেড় হাজার পত্রিকা বিলি করতেন হকাররা। করোনা ছড়ানোর ভয়ে এসব অফিসের অনেক গুলোতে পত্রিকা রাখা বন্ধ করে দেয়, অনেকে নানা অজুহাতে কমিয়ে দেয়। এ কারণে অনেক জায়গায় পত্রিকা নেয়া বন্ধ থাকায় গ্রাহক কমে গেছে। করোনার কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় এসব জায়গায় পত্রিকা বিক্রি হচ্ছে না। আমরা তো চাইলেই এখন অন্য পেশায় যেতে পারি না। দু-একজন হকারের পাশাপাশি অন্য ব্যবসা আছে। বাকিদের পত্রিকা বিক্রি করে সংসার চলে।
জয়দেবপুর পৌর সুপার মার্কেট পয়েন্টের সুপারভাইজার কাজী মো. আব্দুল মান্নান জানান, অনেক ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে এখন পত্রিকায় রাখা হয় না। ব্যবসায়ীরাও দোকানপাটে পত্রিকা রাখা কমিয়ে দিয়েছেন। এসব কারণে পত্রিকার গ্রাহক সংখ্যা কমে যাওয়ায় আামাদের আয়ও কমে গেছে। পাশাপাশি আমাদের সংসারের ব্যয় নানা কারণে বেড়ে গেছে। এ কারণে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে অত্যন্ত কষ্টে জীবন যাপন করছি।
তিনি আরো বলেন, করোনাকালে অনেক গ্রাহকের কাছে পত্রিকার বিল বকেয়া পড়ে গেছে। অনেকে পত্রিকার বিল দিতে পারছে না।
তিনি বলেন, সরকার অনেক পেশার মানুষকে নানাভাবে সহায়তা করছে। গাজীপুরের পত্রিকা হকারদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য তিনি আবেদন জানান।