গণবাণী ডট কম:
দূর্ঘটনায় এনা পরিবহণের বাসের সুপারভাইরজার ও হেলপার নিহতের প্রায় ১৬ মাস চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাজীপুর মহানগরীর ভাওয়াল উদ্যানের সামনে একটি কভার্ডভ্যানের পিছনে এনা পরিবহণের একটি যাত্রীবাহি বাস ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই উক্ত বাসের সুপারভাইরজার ও হেলপার নিহত হয়।
গ্রেফতার চালকের নাম মোঃ মোরশেদ আলম (৩২)। তিনি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী থানার খৈইলকুড়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে। তাকে গেল রোববার রাত আড়াইটায় ময়মনসিংহ শহরের মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে ২০১৩ সাল থেকে এনা পরিবহনের গাড়ী চালক। গ্রেফতারের পর গাজীপুর আদালতে হাজির করা হয়ে চালক আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন, এনা পরিবহণের বাসের সুপার ভাইজার তৈয়বুর ও হেলপার বিল্লাল।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান সোমবার সন্ধ্যায় এতথ্য জানিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, ময়দা ভর্তি একটি কাভার্ড ভ্যান (রেজি নং- ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-৯০৬০) গত ২০২০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে ময়মনসিংহ যাচ্ছিল। পথে গাজীপুর মহানগরীর জিএমপি সদর থানাধীন গজারিয়াপাড়া সাকিনস্থ ভাওয়াল উদ্যানের সামনে কাভার্ড ভ্যানটি পৌছালে এনা পরিবহনের একটি বাস (রেজিঃ নং-ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৪৪১০) এর চালক দ্রুত গতিতে বেপরোয়াভাবে বাস চালিয়ে কভার্ড ভানের পিছনের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে দুই জন লোক মৃত্যুবরণ করে। ঘটনার পরপরই গাড়ীর চালক পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে মোঃ মিলন খান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি জিএমপির সদর থানা পুলিশ তদন্ত করে বাসের অজ্ঞাতনামা চালককে সনাক্ত করতে না পারায় বিজ্ঞ আদালতে সদর থানার চূড়ান্ত রিপোর্ট (নং-৪৬) দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি স্বপ্রণোদিত হয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই গাজীপুর জেলাকে নির্দেশ প্রদান করেন। পরে গাজীপুর পিবিআই এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটি তদন্ত করেন উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ সজিবুল হাসান।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী মোরশেদ আলম ২০১৩ সাল থেকে এনা পরিবহনের গাড়ী চালায়। মামলার ঘটনার দিন আসামী মোরশেদ আলমের সাথে সুপারভাইজার হিসেবে তৈয়বুর রহমান ও হেলপার হিসেবে বিল্লাল ছিল। ঢাকা মহাখালী বাস স্ট্যান্ড থেকে এনা পরিবহনের একটি বাস নিয়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভাওয়াল উদ্যানের সামনে পৌঁছলে উল্টা দিক থেকে একটি প্রাইভেট কার আসামীর বাসের সামনে আসে। আসামী প্রাইভেটকারের লোকজনদের বাঁচানোর জন্য বাম দিকে গেলে গাড়ীটি কাভার্ড ভ্যানের পিছনে স্বজোরে ধাক্কা দেয়। আসামীর গাড়ীর গেটে থাকা সুপার ভাইজার তৈয়বুর ও হেলপার বিল্লাল দাঁড়ানো ছিল। তৈয়বুর ও বিল্লাল কভার ভ্যানের সাথে চাপ খেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আশপাশের লোকজন দৌঁড়ে আসলে ভয় পেয়ে আসামী মোরশেদ পালিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, মোঃ মোরশেদ আলমকে গ্রেফতার পূর্বক বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করলে উক্ত আসামী নিজেকে ঘটনার সাথে জড়িয়ে স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ এর ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।