গণবাণী ডট কম :
গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর এলাকায় প্রেমিকের সাথে পরিকল্পনা করে স্বামীকে খুন করার অভিযোগে স্ত্রীসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর পুলিশ। গ্রেফতারে পর তারা হত্যাকান্ডের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
নিহতের নাম জাহিদুল ইসলাম (৩০)। কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী থানার চর বোয়ালমারী গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে। তিনি গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানাধীন পশ্চিম শৈলডুবী এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, রুপালী খাতুন (২৫)। তিনি নিহত জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী এবং কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী থানার বড়াইকান্দি গ্রামের মোঃ শুকুর আলী দেওয়ানীর মেয়ে। অপরজন, মোহাম্মদ সুজন মিয়া (১৯)। তিনি জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানার নীলেরচর গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলাম সরকারের ছেলে। তিনি গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তাদের মধ্যে ৮/৯ মাস যাবৎ প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
আজ রবিবার বিকালে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-মিডিয়া) মো: জাকির হাসান এসব তথ্য জানান।
তিনি আরো জানান, গত ১৬ জুলাই দুপুরে কাশিমপুর থানাধীন পশ্চিম শৈলডুবী জনৈক ছোফর উদ্দিনের নির্মাণাধীন বাড়ির মাঝখানের রুমে বালুর নিচে জাহিদুল ইসলামের অর্ধ গলিত মৃতদেহ পাওয়া যায়। কাশিমপুর থানা পুলিশ উক্ত মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করিয়া ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজ উদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে কাশিমপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে উপ পুলিশ কমিশনার জাকির হাসানের তত্বাবধানে তথ্য প্রযুক্তি ও ম্যানুয়েল ইন্টিলিজেন্স এর সহায়তায় কাশিমপুর থানার একাধিক টিম কাশিমপুর, কুড়িগ্রাম জেলা ও জামালপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে উক্ত ঘটনার সন্ধিগ্ধ হিসাবে রুপালী খাতুন রৌমারী হতে এবং ও সুজন মিয়াকে জামালপুর গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিকভাবে ধৃত আসামীদ্বয় উক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার ঘটনা স্বীকার করে। জাহিদুলের স্ত্রী আসামী রুপালী খাতুনের সাথে আসামী মোহাম্মদ সুজন মিয়ার বিগত ৮/৯ মাস যাবৎ প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ইতিপূর্বে রুপালী খাতুন বেশ কয়েকবার তার স্বামী জাহিদুল ইসলামকে ফেলে টঙ্গীতে আসামী সুজন এর বাসায় চলে যায় এবং সুজন এর জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানাধীন নীলের চর গ্রামের বাড়ীতে গিয়া বসবাস করে। এ নিয়ে রুপালীর সংসারে দাম্পত্য কলহ ছিল। একারণে ১ জুলাই হতে ৬ জুলাই পর্যন্ত রুপালী তার স্বামী জাহিদুলকে হত্যা করে আসামী সুজন এর সাথে সংসার করার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন গত ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১১ টার দিকে জাহিদুল বাসায় আসলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্যামলী দুধের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ায়। অতঃপর রাত অনুমান ১টার দিকে সুজন মিয়া ঘুমন্ত জাহিদের হাত পা চেপে ধরে ও আসামী শ্যামলী ভিকটিমের উপরে চড়ে বালিশ চাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরবর্তীতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দুজনে মিলে পাশের নির্মানাধীন ঘরের বালির নিচে মৃতদেহ চাপা দেয়।