গণবাণী ডট কম:
মাদক মামলায় গ্রেফতার চিত্রনায়িকা পরীমণি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মুক্তি পান।
গ্রেফতারের পর পরীমনি কাশিমপুরের মহিলা কারাগারে ২৬ দিন বন্দী ছিলেন। তার মুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বুধবার ভোর থেকে কারা ফটকে উৎসুক মানুষ তাকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করেন।
মুক্তিলাভের পর একটি সাদা গাড়িতে করে কারা ফটক থেকে বের হতে দেখা যায় পরীমণিকে। পরীমণি সাদা পোশাকে ছিলেন। এসময় তাকে বহনকারী সাদা রংয়ের গাড়ীর স্কাই রুফ দিয়ে মাথা বের করে হাসিমুখে উপস্থিত ভক্তদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান এবং ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তুলতে দেখা যায়। পরে তিনি কতক ভক্তাতদের সাথে হাত মেলান। তার হাতের তালুতে ‘Dont love (প্রতীকী চিহ্ন) me Bitch’ লেখা ছিল। তবে এ লেখা কার উদ্দেশ্য তিনি লিখেছেন বা কি বার্তা তিনি তার ভক্তদের দিতে চেয়েছেন তা জানা যায়নি।
পরীমনির মুক্তির আগে বুধবার সকাল সোয়া নয়টার দিকে গাজীপুর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন পরিমনির আইনজীবী নিলাঞ্জনা রিফাত সুরুবি ও পরীমণির খালু জসিম উদ্দিন।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় পরীমণির জামিন আদেশ দেন। তিন কারণ বিবেচনায় পরীমণিকে জামিন দেওয়া হয়েছে। যেহেতু পরীমণি একজন চিত্রনায়িকা এবং একজন নারী। তাছাড়া সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত প্রীতিলতা নামক একটি চলচ্চিত্রে তার অভিনয়ের শিডিউল চলছে। এসব বিষয় বিবেচনায় তদন্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) দাখিল পর্যন্ত জামিনের আদেশ দেন আদালত।
গত ১৯ আগস্ট পরীমণির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম। এর আগে গত ১০ আগস্ট পরীমণি ও আশরাফুল ইসলাম দীপুর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস। তার আগে ৫ আগস্ট পরীমণি ও দীপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ।
মাদক মামলায় গত ১৩ আগস্ট পরীমণি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। কারা সূত্র জানায়, পরীমণিকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে (রজনীগন্ধা ভবন) রাখা হয়।
গত ৪ আগস্ট রাতে প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র্যা ব। এ সময় পরীমণির বাসায় বিভিন্ন মাদক পাওয়া গেছে বলে জানায় র্যা ব। ৫ আগস্ট র্যা ব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পরীমণি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করে।
গত ৪ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর বনানীর ১২ নম্বর রোডে পরীমণির বাসায় অভিযান চালায় র্যা ব। মাদকের মামলায় তার ৫ আগস্ট চার দিনের, ১০ আগস্ট দুই দিনের ও ১৯ আগস্ট এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পরীমণির পক্ষে গত ২২ আগস্ট তার আইনজীবীরা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন। এরপর আদালত ১৩ সেপ্টেম্বর জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন।
তবে জামিন শুনানির জন্য ২১ দিন পর দিন ধার্য করায় ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন পরীমণি। পরীমণির জামিন আবেদনের শুনানি ২১ দিন পর ১৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে মহানগর দায়রা জজ আদালতের দেওয়া আদেশ কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেন হাইকোর্ট।
উচ্চ আদালতের রুল নিস্পত্তির আগেই পরীমনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।