গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরে একটি হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি) ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সক্রিয় একটি দুর্ধর্ষ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সন্ধান পেয়েছে। পুলিশ ডাকাতী ও খূনের সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে এবং তাদের দেখানো মতে ডাকাতি করে লুন্ঠিত ৭ টি পিকআপ উদ্ধার করেছে।
গ্রেফতার আসামীরা হলো হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল থানার দৌলতপুরের মোঃ আবদুল বাসেদের ছেলে মোঃ মারুফ হোসেন (৩০), ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানার সানন্দাখালী গ্রামের মোঃ হারেস আলীর ছেলে এনামুল(২২), শেরপুর জেলার সদর থানার টিকারচর এলাকার মৃতঃ মোতালেবের ছেলে মোঃ আমিনুল (২৪), টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানার খড়রিয়া গ্রামের মোহাম্মদ রফিজ মন্ডলের ছেলে মোঃ শামীম (২৪) ও হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল থানার চারিগাঁও গ্রামের মৃতঃ রমিজ আলীর ছেলে আবদুল আহাদ (৩৪)। এরা সকলে গাজীপুর মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে ডাকাতি ও ছিনতাই কাজ করে আসছিল।
জিএমপির এডিসি রেজওয়ান আহমেদ আজ রবিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এসময় তিনি আরো জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর দুপুরে গা্জীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন বারবৈকা মধ্যপাড়া এলাকায় পাকা রাস্তার পার্শ্বে জাকিরের বাগানের ভিতর পরিত্যক্ত জায়গা থেকে গলায় গামছা প্যাঁচানো উপুর করা অবস্থায় অজ্ঞাত একজন পুরুষের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বাসন থানা পুলিশ উক্ত মৃতদেহের সুরতহাল করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজ উদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ বিষয়ে বাসন থানার এসআই মোস্তফা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েল করেন। ঘটনার পরের দিন নিহত ব্যক্তির স্ত্রী ফাতেমা আক্তার (২৬) মরদেহটি তার স্বামীর বলে সনাক্ত করে। তার নাম মোঃ সেলিম সরদার (৩৩)। তিনি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুরের পশ্চিম উদয় নগরের মোঃ শাহ জামাল সরদারের ছেলে। তিনি পরিবারের সদস্য নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর জয়দেবপুর ফুয়াং গেট এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে নিজের পিকআপ চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ঘটনার আগের দিন পিকআপ নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি।তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সক্ষম হয়নি।
তিনি আরো জানান, নিহতের পরিচয় জানার পর মামলার তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৪ সেপ্টেম্বর জিএমপির বাসন থানা ও সদর থানা পুলিশের ৬টি দল যৌথভাবে গাজীপুর ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের সময় গাজীপুর ও হবিগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে আসামীদের দেখানো মতে গাজীপুর ও হবিগঞ্জ থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ডাকাতি ও ছিনতাই করা ৭টি পিকআপ উদ্ধার করা হয়। এরমধ্যে ৪টি গাজীপুর ও ৩টি হবিগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিকভাবে ধৃত আসামীরা উক্ত হত্যাকান্ডসহ আরো পিকআপ ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার ঘটনা স্বীকার করেছে। প্রাথমিকভাবে জানা যায় যে, গত ৩১ আগস্ট রাত ১১টারর দিকে শামীম ও মারুফ নিহতের পিকআপটি গাজীপুর মহানগরীর ভোগরা মোড় থেকে মাওনা যাওয়ার জন্য ১৩শ টাকায় ভাড়া করে। বাসন থানাধীন শাহ আলম বাড়ী থেকে মিক্সার মেশিন নিবে বলে কৌশলে সেলিমকে আসামী মারুফ ও বোরহান সেখানে নিয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে আগে থেকেই ওঁৎপেতে থাকা আমিনুল, এনামুল ও শামীমের সহযোগীতায় সেলিমকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে। পরে লাশের হাত-পা বেধে ঘটনাস্থলে ফেলে যায় এবং মারুফ একা গাড়ি চালিয়ে রাজেন্দ্রপুর কাপাসিয়া হয়ে আশুগঞ্জে গিয়ে গাড়ীর জিপিএস খুলে ফেলে সহযোগী আহাদের কাছে গাড়ি হস্তান্তর করে।
সংবাদ সম্মেলনে জিএমপি এসি রিপন চন্দ্র দাস, মেট্রো সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কমর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মালেক খসরু খান উপস্থিত ছিলেন।