গণবাণী ডট কম:
মাঠের একপাশে সার বাঁধা পিঠার স্টল। টেবিলের উপর সাজানো হরেক করম পিঠা। কেউ পিঠা খাচ্ছে, কেউ ঘুরে ঘুরে দেখছে। কেউবা মুঠোফোনে তুলছে ছবি, সেলফি। অন্যপাশে চলছে পিঠা পরিচিতি, গল্প, কবিতা ও আড্ডা। তা উপভোগ করছে মেলায় আসা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক সবাই। আনন্দে মুখর পুরো মেলা চত্বর।
বৃহষ্পতিবার সকালে গাজীপুর সদর উপজেলার ইকবাল সিদ্দিকী কলেজ ক্যাম্পাসে আয়োজিত শীতের পিঠা উৎসবে গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র। ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটি উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলায় অংশ নেন বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা নিজেদের তৈরি পিঠা উপস্থাপন করেন উৎসবে। এরপর একটি শুভেচ্ছা কুপনের মাধ্যমে উপভোগ করেন বিভিন্ন স্টলের হরেক সাধের পিঠা।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেসমিন আক্তার মনি। মেলা নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরেই তার মনে বইছে আনন্দ। কখন পিঠা বানাবে, কতগুলো পিঠা বানাবে আর কখনইবা উৎসবে জমা দিয়ে সবাইকে অবাক করে দিবে। অবশেষে গতকাল বৃহষ্পতিবার বাস্তবে ধরা দিল সেই আনন্দ। নিজের তৈরি প্রায় ১০ প্রকার পিঠা জমা দেয় সে। সঙ্গে উপভোগ করে অন্যান্য স্টলের নানান স্বাধের পিঠা।
জেসমিন বলছিল, ’আগে কখনো এতো পিঠা এক সঙ্গে দেখিনি। এখানে এমন অনেক পিঠা দেখলাম যেগুলোর নামই জানা ছিল না।’ সে বলে,’ এই পিঠা উৎসব নিয়া গত এক সপ্তাহ ধরেই এক্সসাইটেড ছিলাম। অবশেষে আজ(গতকাল) মেলায় অংশ নিলাম। একরকম পিঠা জমা দিয়ে নানান পিঠার স্বাদ নেওয়া সত্যিই আনন্দের’।
পিঠার স্টলগুলো সাজানো হয়েছে সার বেঁধে। টেবিলের উপর তরে তরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে পাটি সাপটা, ভাঁপা পিঠা, নকশি পিঠা, মাংস পুলি, দুধ পুলি, নারকেল পুলি, দুধচিতই, দুধপোয়া, ঝালপোয়া, মালপোয়া, সেমাই পিঠা, ডিম পিঠা, মাংস-ঝাল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা পিঠা, জামাই পিঠা, রুট পিঠাসহ অন্তত ২০ থেকে ২৫ প্রকার পিঠা। মেলায় আসা প্রত্যেকে ঘুরে ঘুরে সেসব পিঠার স্বাধ নিচ্ছে। এর মধ্যে স্মৃতি ধরে রাখতে কেউ কেউ তুলছে ছবি, সেলফি। আর এতেই এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়েছে পুরো কলেজ মাঠে।
করোনার প্রকোপ আবার বাড়ায় পুরো উৎসবটি আয়োজন করা হয়েছ সংক্ষিপ্ত পরিসরে। শুধু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের জন্য ছিল প্রবেশাধিকার। এই পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলার প্রবীণ শিক্ষক সুনীল চন্দ্র সেন।
আয়োজন নিয়ে ইকবাল সিদিকী বলেন, এটা বাঙ্গালীর ঐতিহ্য। আমাদের প্রাণের উৎসব। আমরা প্রতিবছরই শীতে এ উৎসবের আয়োজন করি। এবার করোনার প্রকোপ থাকায় উৎসব কিছুটা সংক্ষিপ্ত ছিল। তবে এর মাঝেই সবাই খুব উপভোগ করেছে।