গণবাণী ডট কম:
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, আমি আজকে কিছুটা আক্ষেপেরে সাথে বলতে চাই, আমাদের আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট নেতাদের অনুরোধ করতে চাই এবং আমি আইন মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব, আহসান উল্লাহ মাস্টারের হত্যার বিচারের রায় অতিদ্রুত সমাধান করে এ রায় কার্যকরের মাধ্যমে বাংলাদেশসহ এই গাজীপুরকে অভিশাপমুক্ত করার ব্যবস্থা করুন। আমরা চাই এ বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর করা হোক।
এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা ইনশাল্লাহ এ সভা থেকে আশাবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছি, আগামী এক বছরের মধ্যে ১৯তম শাহাদত বার্ষিকীর আগেই আমাদের আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর হবে, দন্ড কার্যকর হবে।
তিনি শহীদ উল্লাহ মাস্টারের ১৮তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুরে গাজীপুর মহানগীর হায়দরাবাদে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের সমাধীর পাশে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান কালে এসব কথা বলেন।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক মো: আখতারউজ্জামান, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য রোমানা ইসলাম টুসী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম নিখিল, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল প্রমুখ।
হানিফ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আজকে মির্জা ফখরুল মায়াকান্না কাঁদেন। কথা কথায় মানবতার কথা বলেন, গণতন্ত্রের ছবক দেন। মির্জা ফখরুল সাহেব আহসান মস্টারসহ অজস্র হত্যাকান্ডের দায় আপনাদের ঘাড়ে আছে। এই আহসান উল্লাহ মাস্টারের রক্তে আপনার নেত্রী খালেদা জিয়া, আপনার নেতা তারেক জিয়ার হাত রঞ্জিত আছে। এ থেকে কোনদিন মুক্তি পাওয়ার সুযোগ নেই। আপনারা যতই মায়াকান্না কাঁদেন আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীর রক্তে আপনার নেত্রীর হাত রঞ্জিত, আপনার নেতার হাত রঞ্জিত। এ হত্যাকান্ডের বিচার বাংলার মাটিতে হয়েছে এবং আরো হবে।
তিনি আরও বলেন, আয়নায় নিজের (ফখরুল) চেহারা দেখুন। খালেদা জিয়া দুর্নীতি ও এতিমের টাকা আত্মসাতের জন্য কারাগারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদন্যতা ও দয়ায় জেলখানার পরিবর্তে বাসায় আছেন। তার ছেলে তারেক রহমান দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে বিদেশে পলাতক। যে দলের দুই শীর্ষ নেতা কারাগারে ও বিদেশে পলাতক তাদের মুখে আইনের কথা, দুর্নীতি ও গণতন্ত্রের কথা মানায় না।
হানিফ বলেন বলেন, বিএনপি মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করে আমাদের এ দেশের এলিট ফোর্স র্যা বের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। মির্জা ফখরুলরা লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে টাকা খরচ করে এ ব্যবস্থা করিয়েছেন। আপনার নেতা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। সেটার জন্য আপনার লজ্জিত হওয়া উচিত।
শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকে মহানগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা আহসান উল্লাহ মাস্টারের সমাধীস্থলে ভীড়ন করেন। তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং দোয়া করেন।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আহসান উল্লাহকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এতে বিএনপির ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ আওয়ামী লীগের। ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল দ্রুত বিচার আইনে এ হত্যা মামলার রায় হয়। ওই মামলায় ছয়জনের মৃত্যুদন্ড ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড বহাল রাখে হাইকোর্ট। সাজা কমে সাতজনের। খালাস পান ১১ জন।
আহসান উল্লাহ মাস্টার গাজীপুর সদর ও টঙ্গী এলাকা নিয়ে গঠিত গাজীপুর-২ আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে দুই দফা পূবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
আহসান উল্লাহ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য থাকার পাশাপাশি জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি।