গণবাণী ডট কম:
বাংলাদেশের খ্যাতিমান সাংবাদিক-লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী আজ বৃহস্পতিবার লন্ডনের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল বকরেছেন (ইন্না—- রাজেউন)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন এবং গত বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আবদুল গাফফার চৌধুরীর সবচেয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনকে নিয়ে লেখা তাঁর ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটির জন্য।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রেস মিনিস্টার আশেকুন নবী চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। আবদুল গাফফার চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন পারিবারিক বন্ধু এবং লেখকও এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
তিনি তিন মেয়ে এবং এক ছেলে রেখে গেছেন। মাস খানেক আগে তার আরেক মেয়ে দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগে মারা যান।
আবদুল গাফফার চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধু মাসুদুল ইসলাম রুহুল জানান, গত কিছুদিন ধরেই নানা ধরণের শারীরিক অসুস্থতার জন্য বার বার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছিল। ২০১১ সালে স্ত্রী বিয়োগের পর তিনি একাই থাকতেন। শেষের দিকে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের সেবা কর্মীরাই বাড়ি এসে তাঁর দেখা-শোনা করতেন।
উনিশশো চুয়াত্তর সালে তিনি অসুস্থ স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে আসেন। এরপর বাকী জীবন তিনি লন্ডনেই স্থায়ীভাবে বসবাস করেছেন।
জীবনের একেবারে শেষের বছরগুলো পর্যন্ত তিনি সক্রিয়ভাবে লেখালেখি করেছেন। তিনি মূলত রাজনৈতিক কলাম লেখক হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিলেন। কিন্তু জীবনের শুরুতে অনেক সৃজনশীল লেখালেখিও করেছেন। তার লেখা বইয়ের মধ্যে আছে ভয়ংকরের হাতছানি, সম্রাটের ছবি, ডানপিটে শওকত, চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান, পলাশী থেকে ধানমন্ডি, শেষ রজনীর চাঁদ এবং কৃষ্ণপক্ষ।
তিনি বাংলাদেশের বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।
যুক্তরাজ্যপ্রবাসী স্বনামধন্য এ সাংবাদিক স্বাধীনতাযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে নিবন্ধিত স্বাধীন বাংলার প্রথম পত্রিকা সাপ্তাহিক জয় বাংলার প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। তিনি ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র রচয়িতা।
বিশিষ্ট সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী বরিশাল জেলার এক জলবেষ্টিত গ্রাম উলানিয়ার চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবা হাজি ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা মোসাম্মৎ জহুরা খাতুন। তিন ভাই, পাঁচ বোনের মধ্যে বড় ভাই হোসেন রেজা চৌধুরী ও ছোট ভাই আলী রেজা চৌধুরী। বোনেরা হলেন মানিক বিবি, লাইলী খাতুন, সালেহা খাতুন, ফজিলা বেগম ও মাসুমা বেগম।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশি’সহ তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় ৩০। এছাড়া তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘একজন তাহমিনা’ ‘রক্তাক্ত আগস্ট’ ও ‘পলাশী থেকে বাংলাদেশ, ।