গণবাণী ডট কম:
ককটেল ফাটিয়ে দিন-দুপুরে দুর্র্ধষ ডাকাতির এক মাস পর অস্ত্র, গুলি ও ককটেলসহ আন্তঃজেলার ডাকাত দলের সহোদর দুই ভাইসহ ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ। গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০টায় মহানগরের কাশিমপুর থানাধীন তেতুইবাড়ী (সানসিটি) এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো নীলফামারী সদর থানা এলাকার বাজার (বন বিভাগ) গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন @ মিতা আনোয়ারা (৩৫), মাদারীপুর সদর থানা এলাকার ডর গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সোবাহানের ছেলে রুবেল (৪০), ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানার পূর্ব রসুলপুর গ্রামের আবেদ আলী বেপারীর ছেলে বাবুল বেপারী@ বাবু (৩৬), শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার বিললৈয়ানা গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে জাকির হোসেন ফরাজী (৪০), একই জেলা ও থানার কাজিকান্দি গ্রামের নুরুল আকন @ নুরুর ছেলে সোলাইমান আকন (৪০), গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পশ্চিম নারিকেলবাড়ী গ্রামের শ্যামইল বাড়ইয়ের ছেলে সাগর বাড়ই (৪১) ও মৃদুল বাড়ই (৪৫)।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকেএকটি বিদেশী পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, এক রাউন্ড তাজা গুলি, ১২ টি অবিস্ফোরিত ককটেল, ৩টি চাপাতি, দুইটি মোটরসাইকেল, দুইটি হেলমেট, একটি অটোরিকশা, দুই রাউন্ড পিস্তলের গুলির খালি খোসা, ৭ রাউন্ড কার্তুজের খোসা এবং একটি ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক জব্দ ও উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি’র) প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
জিএমপি’র কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম আরো জানান, গত ১৬ আগস্ট দুপুরে মহানগরের কাশিমপুর থানার এনায়েতপুর (আনার আলী জুট কারখানার) সমানে ৬/৭ জন ডাকাত মোটরসাইকেল ও অটোরিক্সায় এসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় ডাচ্ বাংলা ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং রাকেটের ডিএসএম শাহেদ শরীফকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করে ৫ লাখ ২২ হাজার টাকা লুটে নেয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডাকাত দলের সদস্য ইউসুফ আলী রানা (৩৫) এবং বিধান হালদারকে (৩১) কাশিমপুরের তেতুইবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায় তাদের অপর সহযোগীরা ওইদিন রাত ৩টায় কাশিমপুর থানার লোহাকৈর এলাকার খান ব্রাদার্স খেলার মাঠে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ডাকাতি সংঘটনের জন্য মিলিত হবে। পরে পুলিশ রাত ১২ টায় ওই খেলার মাঠের আশেপাশের দোকানে অবস্থান নেয়। এসময় ডাকাত দলের কয়েকজন সদস্য মাঠে প্রবেশ করে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গেলে পুলিশ মাঠের চারপাশ ঘিরে ফেলে। এসময় ডাকাত সদস্যরা তাদের কাছে থাকা চাপাতি, আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণ ঘটিয়েধোঁয়ার সৃষ্টি করে। পরে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়লে বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে ডাকাত সদস্য সোলাইমান আকন @ সোলেমান আকন (৪০) এবং বিস্ফোরক দ্রব্যের আঘাতে পুলিশ সদস্য মোস্তাফিজার আহত হয়। এসময় দৌড়ে পালানোর সময় ধাওয়া করে ৭ ডাকাতকে গ্রেফতার করে। আহত পুলিশ সদস্যকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কাশিমপুর থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণ, কর্তব্যরত পুলিশের উপর আক্রমণ, অবৈধ আগ্নেযাস্ত্রের ব্যবহার, বিস্ফোরক মজুদ ও বিস্ফোরণ ঘটানোর অপরাধে চারটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের নামে গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, রংপুর জেলা এবং ঢাকার বিভিন্ন থানায় ডকাতি ও দস্যুতার মামলা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি’র) অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) জিয়াউল হক, অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) মোঃ দেলোয়ার হোসেন, উপ-কমিশনার (উত্তর) আবু তোরাব শামসুর রহমান, উপ-কমিশনার (সদর) ইউতুৎমিশ, উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) ইব্রাহিম খান, উপ-কমিশনার (ট্রাফিক-মিডিয়া) মোঃ আলমগীর হোসেনসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।