গণবাণী ডট কম:
বিদেশ থেকে ডিম আমদানি নয়, ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে সব মন্ত্রণালয়কে মনিটরিং জোরদার করতে হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
মন্ত্রী বলেন, ডিম আমদানি করলে আমাদের আমদানি নির্ভরতা বাড়বে যা আমরা চাইনা। তাই বিদেশ থেকে ডিম আমদানি দরকার নেই। একটু কষ্ট হবে, কম খাব। তারপরও স্থানীয় পর্যায়ে ডিম উৎপাদন করে খেতে হবে। সরবরাহ কমে গেছে বলে দাম বেড়েছে। আর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে নানা চক্রান্ত করে কিছু হ্যাচারি মালিক ডিমের দাম অস্থির করেছে। তাই ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে সব মন্ত্রণালয়কে মনিটরিং জোরদার করতে হবে।
তিনি বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর ‘কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালা-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
বারি‘র কাজী বদরুদ্দোজা মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. রুহুল আমিন তালুকদার, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর চেয়ারম্যান এ এফ এম হায়াতুল্লাহ, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আঃ গাফ্ফার খান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর।
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এ পর্যন্ত বিভিন্ন ফসলের অনেক উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। কিন্তু এসব প্রযুক্তির অধিকাংশই কৃষকের কাছে সেভাবে পৌছায়নি। তাই দেশের কৃষির উন্নয়নে এসব জাত ও প্রযুক্তি দ্রুততর সময়ের মধ্যে কৃষকের কাছে পৌছে দিতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফসলের উন্নত জাত ও প্রযুক্তি কৃষকের কাছে পৌছে দেয়ার মাধ্যমে তাদের আয় বাড়াতে হবে। কৃষকের আয় বৃদ্ধি করা না গেলে দেশের কৃষির উন্নয়ন হবে না। আমরা বলছি দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু আমাদের শুধু দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে হবে না, অন্যান্য ফসলের উৎপাদনও বাড়াতে হবে। বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ২০-২৫ হাজার কোটি টাকার ভোজ্য তেল এবং ৫-৭ হাজার কোটি টাকার ডাল আমদানি করতে হয়। আমরা আগামী ৪ বছরের মধ্যে স্থানীয়ভাবে ভোজ্য তেলের উৎপাদন ৪০% বাড়াতে চাই। এতে আমাদের প্রায় ১০-১২ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
বারি‘র মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার জানান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট-এ বর্তমানে ২১১টি ফসল নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে বারি বিভিন্ন ফসলের ৬২৫টি উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিডসহ), রোগ প্রতিরোধক্ষম ও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশ প্রতিরোধী জাত এবং ৬১২টি উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তিসহ মোট ১,২৩৭টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এ সকল প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে দেশে তেলবীজ, ডালশস্য, আলু, গম, সবজি, মসলা এবং ফল ফসলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব প্রযুক্তির উপযোগিতা যাচাই বাছাই ও দেশের বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কর্মসূচি গ্রহণ করাই এ কর্মশালার প্রধান উদ্দেশ্য।
মন্ত্রী কৃষি প্রযুক্তি, যন্ত্রপাতি ও ফসল প্রদর্শনীর স্টল ঘুরে দেখেন।