গণবাণী ডট কম:
ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় একটি ফুটবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৪ জন হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করলে পদদলিত হয়ে বেশীরভাগ সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দু জন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন।
ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন সেখানকার একটি ফুটবল স্টেডিয়ামে পদদলিত হয়ে অন্তত ১৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বের ভয়াবহ স্টেডিয়াম বিপর্যয়গুলোর মধ্যে অন্যতম এই ঘটনাটি ঘটেছে একটি ফুটবল ম্যাচের পর।
শনিবার সন্ধ্যায় ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর (জাভা) মালাংয়ে স্বাগতিক আরেমা এফসি ৩-২ গোলে সুরাবায়ার ক্লাব পারসেবায়ার কাছে হেরে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরাজয়ের হতাশা থেকে আরেমেনিয়ার সমর্থকরা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের দিকে বোতলসহ অন্যান্য বিভিন্ন জিনিস ছুঁড়তে থাকে। এমনকি প্রতিবাদের এক পর্যায়ে তারা কানজুরুহান স্টেডিয়ামের মাঠে প্রবেশ করে আরেমার কর্র্তৃপক্ষের বিপক্ষে স্লোগান দিতে থাকে। তাদের একটাই প্রশ্ন ছিল ২৩ বছর ঘরের মাঠে অপরাজিত থাকা দলটি এভাবে কেন পরাজিত হবে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে খেলার শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথে সমর্থকরা মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এরপর পুলিশ টিয়ার শেল ছুঁড়তে শুরু করে এবং এ সময় হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে এবং দমবন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিলো বলে জানিয়েছেন পূর্ব জাভার পুলিশ প্রধান নিকো আফিনতা।
দেশটির নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন স্টেডিয়ামটিতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে চার হাজার দর্শক বেশি ছিলো।
ঘটনাটির তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশের শীর্ষ লীগের সব খেলা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।
পুলিশ প্রধান নিকো আফিনতা বলেন, “চৌত্রিশ জন স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাকীরা হাসপাতালে নেয়ার পর মারা গেছেন”।
তিনি জানান, সবাই একটি পয়েন্ট দিয়েই বের হওয়ার চেষ্টা করছিলো। ফলে প্রচণ্ড ভিড়ের এক পর্যায়ে অক্সিজেনের অভাবে নিঃশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে প্রাণহীন দেহগুলো ফ্লোরে পড়ে আছে।
ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে ঘটনাটি তদন্ত করা হবে এবং তারা বলেছে এ ঘটনা দেশটির ফুটবল ভাবমূর্তিতে কালিমা মেখে দিয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ইন্দোনেশিয়া সরকার। বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে তারা। সংবাদমাধ্যমকে দেশটির যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী জাইনুদিন আমালি বলেন, দুঃখজনক এ ঘটনা এমন সময় ঘটল, যখন ফুটবলের ভক্ত-সমর্থকরা স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।
আগামী বছর ২ মে থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ায় ফিফা অনুর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা রয়েছে, যেখানে ২৪টি দল অংশ নিবে। স্বাগতিক হিসেবে ইন্দোনেশিয়া সরাসরি এই যুব বিশ্বকাপে অংশ নেবার সুযোগ লাভ করেছে। আমালি বলেছেন এই ধরনের দু:খজনক ঘটনা ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল ইমেজকে নিশ্চিতভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ করবে।