নিজস্ব প্রতিবেদক, কাপাসিয়া (গাজীপুর):
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলাধীন আমরাইদ পপুলার ডিজিটাল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গলার টনসিল অপারেশন করার সময় টনসিলের বদলে শ্বাসনালী কেটে ফেলায় এক রোগীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
নিহতের নাম আলমগীর হোসেন (৩২)। তিনি কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের চরদুর্লভখা নামা পাড়া এলাকার শবজি ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন আনারের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, সদ্য দুবাই ফেরত আলমগীর হোসেন টনসিলের অপারেশনের ঐ হাসপাতালে গত শুক্রবার সকালে ভর্তি হন। পরে হাসপাতালের লোকজন তাকে জানায়, অপারেশন করতে হবে। তিনি রাজী হলে ঢাকা মেডিকেলের নাক কান গলা বিষয়ের ডাক্তার এটিএম ফয়সাল অপারেশন করেন। এসময় তিনি টনসিলের পরিবর্তে ভূলবশত রোগীর স্বাসনালী কেটে ফেলেন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে আলমগীর মারা যায়। আলমগীরের একটি ছেলে রয়েছে এবং তার স্ত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানা পুলিশ নিহতের বাড়ি থেকে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
নিহতের চাচাতো ভাই জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, দুবাই ফেরত আলমগীর হোসেন গত শুক্রবার সকালে টনসিল অপারেশনের জন্য আমরাইদ পপুলার ডিজিটাল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন। পরে সকাল ১১ টার সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার টনসিলের অপারেশন করতে তাকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। দীর্ঘ সময় পর তার স্বজনরা জানতে পারেন কর্তব্যরত ডাক্তার অপারেশনের সময় টনসিলের বদলে শ্বাসনালী কেটে ফেরেছে। একারণে রোগীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে। পরে রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পেরে হাসপাতালের লোকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় রোগীকে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে নেওয়ার পর আলমগীর মারা যায়। আলমগীর হোসেনের ৩ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। তার স্ত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
এ বিষয়ে হাসপাতালের মালিক আবুল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তিনি কোনো ডাক্তার নন। অস্ত্রোপাচার করেছেন নাক, কান ও গলা বিষয়ের ডাক্তার। তার সাথে কথা বলে বিষয়টি জেনে নেন। পরে অস্ত্রোপাচারকারী ডাক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিষয়ের ডাক্তার এটিএম ফয়সালের মোবাইলে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রহমান জানান, তিনি দুপুর আড়াইটার দিকে বিষয়টি জেনেছেন। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ওসি এএফএম নাসিম জানান, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর স্থানীয় কেউ ফোন করে ঘটনা জানায়। পরে নিহতের বাড়ী থেকে লাশটি উদ্ধার করে মৃত্যুর কারণ জানার জন্য ময়না তদন্ত করতে লাশটি গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্বজনেরা অভিযোগ দিলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।