গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরে ইয়াবা উদ্ধারের সময় গ্রেফতার হওয়া আসামীর কাছ থেকে ইয়াবা ব্যবসার সাথে আরো কারা জড়িত তা জানার জন্য জিগ্যাসাবাদের সময় ২ বছর আগে নিখোঁজ ব্যক্তির খুন হওয়ার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। পরে সোমবার বিকালে ঝড়ের মধ্যে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার আসামীর দেখানো স্থান থেকে খুন হওয়া ব্যক্তির কংকাল উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাটি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন নান্দন কড্ডা এলাকার। সেখানেই ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর খুন হন জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ থানার পলাশতলা গ্রামের নুরু বক্তারের ছেলে মোঃ মিনারুল (৪১)। মিনারুলের ভাই হত্যা মামলা তুলে নিতে রাজী না হওয়া এবং মাদকের টাকার ভাগভাটোয়ারা নিয়ে সহযোগী মাদক কারবারীদের হাতে হত্যার শিকার হন মিনারুল।
এমনি লুমহর্ষক ঘটনার চিত্র তুলে ধরেছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো: দেলোয়ার হোসেন।
তিনি জানান,পরিবার নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর কড্ডা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন মিনারুল। তিনি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। মিনারুলের নামে জিএমপির বিভিন্ন থানায় ৭টি মাদক সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর তিনি নিখোঁজ হন। পরে তাঁর স্ত্রী মৌসুমী গত ২০২১ সালের ৯ জানুয়ারি জিএমপির কোনাবাড়ি থানায় নিখোঁজ জিডি করেন এবং এর পরে র্যাবের নিকট অভিযোগ করেন। কিন্তু মিনারুলের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো জানান, গত ২২ অক্টোবর ২ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবাসহ মো: আলম হোসেনসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। আলমও ৯টি মাদক মামলার আসামি। মাদক ব্যবসার সাথে আরো করা জড়িত, এ মাদক কোথা থেকে কিভাবে আনা হয় এসব জানার জন্য মোঃ আলমকে আদালতের মাধ্যেমে পুলিশ রিমান্ডে এনে জিগ্যাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে জানায়, যে গত ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর আনুমানিক রাত ৮টার দিকে জিএমপি বাসন থানাধীন নান্দন কড্ডা এলাকার মোল্লাবাড়ির জনৈক হালিমের বাড়ির ভাড়া করা রুমে মাদক ব্যবসার টাকা মাদকের টাকার ভাগাভাগি ও মিনারুলের বড়ভাই মিজান হত্যা মামলা তুলে নিতে মিনারুলকে চাপ দেওয়া হয়। এনিয়ে মিনারুলের সাথে আসামি আলমসহ আরো ৪/৫ জনের হাতাহাতি ও কাথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আলমসহ অন্যরা মিনারুলকে লোহার রড দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে। পরে মৃতদেহ ঐ বাড়ি হতে একটু সামনে মাটি চাপা দিয়ে পুতে ফেলা হয়। এরপর থেকে মিনারুল নিখোঁজ ছিল।
পরে আসামী আলমের স্বীকারেক্তি ও দেখানো মতে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে ঝড় বৃষ্টির মথ্যে সোমবার বিকাল ৫টার দিকে নিহত মিনারুলের মরদেহের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়।
এসময় জিএমপির উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) আবু তোরাব মো: সামছুর রহমান, অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) রেজওয়ান আহমেদ,সহকারী পুলিশ কমিশনার বেলাল হোসেন, বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মালেক খসরু খানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) রেজওয়ান আহমেদ জানান, জিগ্যসাবাদে আসামী আলম প্রাথমিকভাবে ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জড়িত অন্যান্য আসামীদের পরিচয় প্রকাশ করেছে। এঘটনায় মাদক মামলার বাদী বাসন থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক সুরুজ্জামান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।