গণবাণী ডট কম :
গাজীপুরের ঐতিহাসিক রাজবাড়ী মাঠে আজ দুপুরে শুরু হয়েছে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন । দীর্ঘ ৭ বছর পর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে । ইতিমধ্যেই সম্মেলনে আসা নেতার্কীদের পদভারে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে রাজবাড়ী মাঠ।নানা রঙের টুপি, গেঞ্জি পরে হাতে বিভিন্ন নেতাদের ছবি ও প্লেকার্ড নিয়ে কর্মীরা মাঠে উপস্থিত হচ্ছেন সকাল থেকেই।কানায় কানায় পূর্ণ রাজবাড়ী মাঠের বাইরেও বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে ।
সম্মেলনের প্রথম পর্বে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি তার বক্তব্যে জানান গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে দুইজন প্রার্থী এবং সাধারণ সম্পাদক পদের ১৬ জন প্রার্থী নিজেদের নাম প্রস্তাব করেছেন। সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নতুন সভাপতি সম্পাদকের নাম ঘোষণা করবেন।
এর আগে দুপুর ২ টার পর জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলন শুরু হয় ।
মঞ্চে উপস্থিত আছেন প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবেব ক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ডঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এম পি ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি। সম্মেলনের প্রধান বক্তা আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। এতে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের সভাপতিত্বে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বক্তব্য রাখবেন।
ইতিমধ্যে সম্মেলনে বক্তব্য দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি,মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, দেলোয়ার হোসেন, এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার, আনোয়ার হোসেন, সাহাব উদ্দিন ফরাজী, ইকবাল হোসেন অপু এমপি , স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য বেগম শামসুন নাহার ও অধ্যাপিকা রুমানা আলী টুসি, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আতাউল্লাহ মন্ডল, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
দীর্ঘ ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনেকে ঘিরে বেশ কয়েকদিন ধরে মহানগরের সর্বত্র বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। ব্যানার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে সড়ক, মহাসড়কসহ পুরো মহানগর এলাকা। রাজধানী পাশের অতিগুরুত্বপূর্ণ এ মাহনগরের নেতৃত্বের হাল কে ধরছেন এ নিয়ে চলছে নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষদের মাঝে নানা আলোচনা ।
দলীয় সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের মার্চে অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানকে সভাপতি এবং জাহাঙ্গীর আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা হয়। এরও প্রায় দুই বছর পর ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পুর্ণাঙ্গ কমিটি এবং ২১ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির কারণে জাহাঙ্গীর আলম বহিস্কার হলে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পদকের দায়িত্ব পান ১ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল।
এমতাবস্থায় সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য, যুব ও ক্রিড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলকে আহবায়ক করে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। তারপর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে স্থান করে নিয়েছে এ সম্মেলন।
সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও বর্তমান সভাপতি এডভোকেট আজমত উল্লাহ খান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলিমউদ্দিন বুদ্দিনের পক্ষে প্রচারণা শোভা পাচ্ছে। তবে কেউই প্রকাশ্যে নিজেদের প্রার্থীতা নিয়ে মুখ খুলেননি। তবে,সভাপতি পদ নিয়ে মৌনতা থাকলেও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন প্রায় ডজন খানেক নেতা। তাদের শুভেচ্ছা বার্তা, দোয়া প্রার্থনা সম্বলিত বিলবোর্ড, পোস্টার, ফেস্টুন এবং তোড়ণে ছেয়ে গেছে মহানগরীর অলি-গলি রাজপথ। ইতিমধ্যে মহানগরের ঐতিহাসিক রাজবাড়ী মাঠে সম্মেলনের মঞ্চ পুরোপুরি প্রস্তুত না হলেও এর চারপাশ ঢেকে ফেলা হয়েছে বড় বড় বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন দিয়ে। এসব প্রচারপত্রে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি প্রার্থীদের হাসি মুখের ছবি নগরবাসীর নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে।
এদিকে, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রচার-প্রচারণা, গণসংযোগ এবং অন্যান্যভাবে যাঁরা এগিয়ে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আতাউল্লাহ মন্ডল, ২ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জাহিদ আহসান রাসেলের চাচা মতিউর রহমান মতি, সহ-সভাপতি আফজাল হোসেন রিপন, সদস্য এডভোকেট আব্দুল হাদী শামীম, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল হাসান রাসেল সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেন, গাজীপুর ভাওয়াল বদরে আলম কলেজের সাবেক ভিপি আব্দুল হালিম সরকার প্রমুখ।
সম্মেলন শুরুর পর মির্জা আজম এমপি এই সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের আগ্রহী প্রার্থীদের কে একজন প্রস্তাব করেই ও একজন সমর্থনকারীর নাম সহ নিজ নিজ প্রার্থীতা জানানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ সময় তিনি জানিয়েছেন সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্য থেকে নতুন কমিটির সভাপতি সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হবে।
সম্মেলনে আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি বলেছেন সভাপতি পদে দুইজন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ জন নিজেদের প্রার্থিতা ঘোষণা করে নাম প্রদান করেছেন। সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে তাদের মধ্যে থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি।