গণবাণী ডট কম:
শেরপুরের নকলায় কিস্তির টাকা নিয়ে ঝগড়া করে স্ত্রীকে খুন করে পালিয়ে আসার পর গাজীপুর থেকে ঘাতক স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১।
গ্রেফতারকৃতের নাম রাসেল মিয়া (৪২)। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার বৈরাগীরচালা এলাকার মৃত মজিবুর রহমান খানের ছেলে। তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। গত রোববার (৪ ডিসেম্বর) গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নিহতের নাম শাহনাজ আক্তার (৩৫)।তিনি শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার চন্দ্রকোণা ইউনিয়নের জানকিপুর গ্রামের বিষু মিয়ার মেয়ে।
র্যাব-১ গাজীপুরের স্পেশালাইজড পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর এ এস এম মাঈদুল ইসলাম সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে এ তথ্য জানান।
তিনি আরো জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে শাহনাজ ও রাসেলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বাড়ি করে সেখানে বসবাস করে আসছিলেন রাসেল। সম্প্রতি পারিবারিক বিভিন্ন বিয়ষসহ স্থানীয় এনজিও’র কিস্তি নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ শুরু হয়। গত শনিবার (৩ ডিসেম্বর) ওই সমিতির কিস্তির টাকা নিয়ে রাত ১২টায় তাদের মধ্যে আবারও ঝগড়া হয়। পরে একই দিন রাত ৩টায় শাহনাজকে মারধর করে ঘরের বাইরে থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে রাসেল পালিয়ে যান। ৪ ডিসেম্বর সকালে বাইরে থেকে দরজায় তালা ঝুলতে দেখে পরিবারের লোকজনের সন্দেহ হয়। তারা তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে তারা শাহনাজকে মৃত অবস্থা পড়ে থাকতে দেখেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নকলা থানা পুলিশ র্যাব-১ গাজীপুর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের সহযোগিতা চায়। পরে র্যাব-১ গাজীপুর পোড়াবাড়ী ক্যাম্প তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে জানতে পারে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় অবস্থান করছে রাসেল। পরে র্যাব-১ বাঘের বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল স্বীকার করে, গত শনিবার রাত ৩টায় আর্জেন্টিনার খেলা দেখে বাসায় ফেরে। এ সময় কিস্তির টাকা জোগাড় করা নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে তাকে লাথি মারে শাহনাজ। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে রাসেলও তার বুকে ও মুখে এলোপাতাড়ি লাথি মারতে তাকে। এতে শাহনাজ ঘরের মেঝের সঙ্গে মাথায় আঘাত পেয়ে মারা যান। এটা বুঝতে পেরে রাসেল বাইরে থেকে ঘরের দরজায় তালা দিয়ে ভোরে গাজীপুরে চলে যায়। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রোববার (৪ ডিসেম্বর) রাতে আসামিকে নকলা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ জানান, সুরতহাল প্রতিবেদনে শাহনাজ আক্তারের মুখ ও মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তার মা বাদী হয়ে রাসেলকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেছেন। তাকে র্যা বের সহযোগিতায় গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত আসামীকে কারাগারে পাঠায়।
মন্তব্য