গণবাণী ডট কম:
ব্রাজিলের ফুটবলের রাজা, কিংবদন্তী পেলে এডসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো, সারা বিশ্বে যিনি পেলে নামে বিখ্যাত, ৮২ বছর বয়সে মারা গেলেন।
সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১টায় (বাংলাদেশ সময়) তার মৃত্যুসংবাদ আসে।
ক্লোন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন কিংবদন্তী পেলে। প্রায় ১ মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শরীরে কার্যকর হচ্ছিল না ক্যান্সারের চিকিৎসা। তিনিও জানতেন সময় ফুরিয়ে এসেছে…।
বিতর্ক হলেও অনেকে তাকেই সর্বকালের সেরা ফুটবল খেলোয়াড় মনে করেন।
মাত্র সতের বছর বয়সে তারকাখ্যাতি পেয়েছিলেন পেলে সুইডেনের ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ে ব্রাজিল দলের হয়ে দারুণ ভূমিকার জন্য।
তার ২১ বছরের ফুটবল ক্যারিয়ারে ১৩৬৩ ম্যাচ খেলে রেকর্ড ১২৮১ গোল করেন পেলে। এর মধ্যে ব্রাজিলের হয়ে ৯২ ম্যাচে ৭৭টি আন্তর্জাতিক গোলও রয়েছে তার।
মূলত তিন তিনবার বিশ্বকাপ জয় করার জন্য পেলে বিখ্যাত হয়েছেন। তিনিই একমাত্র খেলোয়াড়- নারী কিম্বা পুরুষ- যিনি এতবার বিশ্বকাপ জয় করেছেন।
১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ সালে বিশ্বকাপ জয় করেছেন এবং ২০০০ সালে ফিফা তাকে শতাব্দী সেরা খেলোয়াড় ঘোষণা করে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি কিডনি ও প্রস্টেট সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছিলেন।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে অপারেশন করে তার কোলন থেকে টিউমার অপসারণ করা হয় সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হসপিটালে।
পরে গত মাসে তাকে আবারো হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
তার কন্যা কেলি নাসিমেন্তো হাসপাতাল থেকে তার পিতার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ খবর ভক্তদের জানাচ্ছিলেন প্রতিনিয়ত সামাজিক মাধ্যমে।
বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকেই তিনি লিখেছেন, “আমাদের সব কিছুর জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। আমরা তোমাকে সীমাহীন ভালোবাসি। শান্তিতে ঘুমাও”।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও পেলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে, “কোলন ক্যান্সারসহ আগের সমস্যাগুলোর ফলস্বরূপ অনেকগুলো প্রত্যঙ্গ অকার্যকর হয়ে পড়া’কেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
‘ ভালোবাসা, ভালোবাসা এবং চিরন্তন ভালোবাসা’
পেলের টুইটার অ্যাকাউন্টে বলা হয়েছে, “কিং পেলের যাত্রাপথে ছিলো প্রেরণা আর ভালোবাসাই, যিনি আজ শান্তিতে বিদায় নিলেন। ভালোবাসা, ভালোবাসা এবং চিরন্তন ভালোবাসা”।
ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশন বলেছেন সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়ের চেয়েও বেশি কিছু ছিলেন পেলে।
“বিজয়ী ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলে আমাদের ফুটবলের রাজা। যিনি কখনো কঠিন সময় মোকাবেলা করতে ভয় পাননি। তিনি তার পিতাকে একটি বিশ্বকাপ এনে দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু আমাদের উপহার দিয়েছেন তিনটি”।
“রাজা আমাদের নতুন ব্রাজিল উপহার দিয়েছিলেন এবং আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ। ধন্যবাদ, পেলে”।
পেলের সাবেক ক্লাব সান্তোষ তার শেষকৃত্যানুষ্ঠানের বিস্তারিত ঘোষণা করেছে।
সোমবার সকালে তার মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে ক্লাবের এস্তাদিও উরবানো কালদেইরা’য় আনা হবে যেখানে মাঠের মাঝখানে কফিন রাখা হবে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
মঙ্গলবার শোভাযাত্রা সহকারে পারিবারিক কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হবে।
মন্তব্য