গণবাণী ডট কম:
আগামী শুক্রবার (২০ জানুয়ারী) থেকে শুরু হবে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের অংশ গ্রহণে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের। তা চলবে রোববার (২২ জানুয়ারী) পর্যন্ত। মঙ্গলবার ময়দান বুঝে নেওয়ার পরপরই সাদ পন্থী আয়োজক সদস্যরা ময়দান পরবর্তী ইজতেমার আগত মুসুল্লিদের ব্যবহারের উপযোগী করতে কাজ শুরু করেছেন। একাজে সহযোগিতা করছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসন
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার একদিন পর মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান ইজতেমা ময়দোনের দায়িত্বে তাবলীগের জুবায়েরপন্থি ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজ হান্নানের কাছ থেকে ইজতেমা ময়দান বুঝে নেন। পরে তিনি তাবলীগের সাদ কান্ধলভি (সাদপন্থি) ডা.মোহাম্মদ আব্দুস সালামের নিকট ময়দানের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
ময়দান হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সচিব আব্দুল হান্নান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এসএম সাইফুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মামুনুল করিম, গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. ইব্রাহিম। এছাড়া জুবায়েরপন্থী মুরুব্বী প্রকৌশলী মাহফুজ, মিডিয়া সমন্বয়কারী জহির ইবনে মুসলিম এবং সাদপন্থী মুরুব্বী প্রকৌশলী শাহ মো: মহিবুল্লাহ, প্রকৌশলী মো: নূর মোহাম্মদ, ড. মো: আব্দুস সালাম, ড. রেজাউল করিম এবং হাজী মনির হোসেন।
ময়দান বুঝে নেয়ার পর সাদপন্থি ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বি ডা.মোহাম্মদ আব্দুস সালাম বলেন,প্রথম পর্বে ইজতেমায় ময়দানে প্রচুর ক্ষতি সাধন করা হয়েছে। বয়ানের মাইক নষ্ট, গ্যাসের চুলা ও পানির কল ভাঙ্গা,বিদ্যুতের তার ছেড়া, ময়দানে ময়লা আবর্জনার স্তুপ রয়েছে।
তিনি আরো জানান, দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিতে চার হাজার বিদেশি মুসল্লি বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন মসজিদে অবস্থান করছেন। এপর্বে প্রায় দশ হাজার বিদেশি মুসল্লি অংশ নিবেন। আগামী বছর ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে প্রথম পর্ব আমাদের (সাদপন্থি) করার কথা রয়েছে। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এক বৈঠকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। তারা(জুবায়েরপন্থি) মেনে নিয়েছিলো। দ্বিতীয় পর্ব শেষে ময়দানের সামান (মালামাল) আমাদের তত্ত্বাবধানে দিতে আলোচনা করবো। মাওলানা সাদের আগমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন,সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করলে মাওলানা সাদ দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় অংশ নেবেন।
সা’দ পন্থী তাবলীগ পরিচালনা কমিটির আরেক সদস্য মো: মিজান জানান, মঙ্গলবার দুপুরে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে ইজতেমা ময়দান বুঝে নিয়েছি। এখন আমরা মাঠ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা, নষ্ট সামিয়ানা ও মাইক, বিদ্যুত সংযোগ দেখে ঠিক করা হবে। বুধবার থেকে বিভিন্ন নজমের সাথীরা জামাত বন্দি হয়ে ময়দানে আসতে শুরু করবেন। এরআগেই পুরো ময়দান ঠিক হবে ইনশাল্লাহ। তিনি অভিযোগ করেন, দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা নিয়ে ফেসবুকে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি মুসুল্লীদের ওইসব অপপ্রচারে কান না দিতে অনুরোধ করেছেন। প্রশাসনও তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ জানান, ইজতেমায় জরুরী পরিচ্ছন্নতা সেবা প্রদানের জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সার্বক্ষণিক গার্বেজ ট্রাকসহ প্রায় ৬০০ পরিচ্ছন্নকর্মী নিরলসভাবে কাজ করছে। ইজতেমা ময়দানের দক্ষিণ পাশে তুরাগ নদীর তীরে বর্জ্য ফেলার জন্য অস্থায়ীভাবে ড্যাম্পিং পয়েন্টে সকল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্লিচিং পাউডারসহ অন্যান্য উপকরণ মজুত রয়েছে। দ্বিতীয় পর্বের আয়োজকদের চাহিদা মতো প্রস্তুতিকাজে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, প্রথম পর্বের আয়োজক জুবায়েরপন্থীদের কাছ থেকে ইজতেমা ময়দান বুঝে নিয়ে দ্বিতীয় পর্বের আয়োজক সাদপন্থি মুরুব্বীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা আয়োজকদের যাতে কোনো ধরণের অসুবিধা না হয় সে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের যে সকল সহযোগিতা প্রয়োজন আমরা সব ব্যবস্থা করে দেব। আশা করছি সকলের সহযোগীতায় ইজতেমার প্রথম পর্বের ন্যায় দ্বিতীয় পর্বও সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন,দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক বিষয়ে প্রথম পর্বের মতো সিসিটিভি, ওয়াচ টাওয়ার,র্যা ব-পুলিশ টহলসহ যে ব্যবস্থা ছিল একই ব্যবস্থা থাকবে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত ময়দান এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা বঝায় থাকবে।