গণবাণী ডট কম:
অবশেষে চালু হচ্ছে গাজীপুরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত ‘ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনের টঙ্গী-জয়দেবপুর ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত অংশের ১১ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চালুর পরপরই এই লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাওয়া-আসায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ঢাকা-টঙ্গী, টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশন। কিন্তু এই দুই সেকশনের মধ্যে ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে দুটি ডুয়েলগেজ লাইন ও একটি ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে একটি ডুয়েলগেজ লাইন চালু রয়েছে।
একারণে টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বেশি সংখ্যক ট্রেন পরিচালনা করা যাচ্ছিলনা। তাই ঢাকা থেকে আরও ট্রেন চলাচল বাড়ানো, ভ্রমণের সময় সাশ্রয়, যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধির লক্ষে ২০১২ সালের নভেম্বরে ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। লক্ষ্য ছিল এ প্রকল্পের আওতায় অপারেশনাল ক্যাপাসিটি বাড়াতে প্রকল্পের আওতায় সিগন্যালিং ও টেলিকম কাজসহ ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে দ্বিতীয় ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ৩৩ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার লুপলাইনসহ ১১৬ কিলোমিটার ও চারটি স্টেশন পুনঃর্নির্মাণ করা। আর এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রকল্পের কাজ ২০১৫ সালে শেষ করার কথা থাকলেও ওই বছরে নিয়োগ দেওয়া হয় পরামর্শক। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ এক দফা বাড়ানো হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগসহ নানা প্রক্রিয়া শেষ করে প্রকল্পের অবকাঠামোগত কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়া হয় ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। আর ৮৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় গিয়ে ঠেঁকেছে ১ হাজার ৩শ কোটি টাকায়।
প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আরা কেয়া বলেন, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ঢাকার কমলাপুর থেকে জয়দেবপুর জংশন পর্যন্ত রেলপথ ফোর লেনে উন্নীত করার কার্যক্রম শুরু হয়। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফ কন কল্পতরু এ ডাবল লাইনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে। টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ১১ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এ লাইন দিয়ে নিয়মিত ট্রেন চলাচল করবে। ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হলে এ পথে চলাচলকারী যাত্রীদের সেবার মান বৃদ্ধি পাবে এবং তাদের সময় সাশ্রয় হবে।
বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন উপলক্ষে জয়দেবপুর রেল জংশনের পশ্চিম প্রান্তে খোলা জায়গায় সামিয়ারা টানিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রেল লাইন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা, নতুন করে পাথর বিছানোসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে জয়দেবপুর রেলস্টেশনের সিনিয়র স্টেশন মাস্টার রেজাউল করিম জানান, সিঙ্গেল লাইন থাকার কারণে এতদিন অনেক সময় অন্য আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচলের জন্য জয়দেবপুর এবং ধীরাশ্রম স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। এখন আর কোন ট্রেনকে অন্য ট্রেনের চলাচল স্বাভাবিক ঠিক রাখার জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হবে না।
তিনি আরো বলেন, নতুন লাইনটি ম্যানুয়াল্লি চলবে। এ কারণে কাঙ্খিত মানে সেবা পাওয়া যাবেনা। নতুন লাইনটি ইনটারলকিং সিস্টেমের আওতায় আসতে আরো একটু সময় লাগবে।