শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২ ফাল্গুন ১৪৩১

সেকশন

 

৭১ বছর ধরে অবহেলিত ভাষা শহীদদের স্বজনেরা

Asad
প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৮:১৪:৩২ | পঠিত: ৫৯৭

---

গণবাণী ডট কম:

মোদের গরব মোদের আশা আমরি বাংলা ভাষা। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আজ আমরা মায়ের মুখের ভাষা বাংলায় কথা বলছি, তাঁদের উত্তরসূরীরা আজও পায়নি তাঁদের যোগ্য মর্যাদা ও স্বীকৃতি। এরই মধ্যে কেটে গেছে ৭১টি বছর। কিন্তু ভাষার জন্য যাঁরা জীবন দিয়েছেন, আজো তাঁদের যথাযথ মুল্যায়ন করা হয়নি। এত বছর পরও ভাষা শহীদদের স্বজনদের কণ্ঠে আক্ষেপ আর অভিমান। অনেক সমস্যায় জর্জরিত থাকার কথাও তুলে ধরেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা। সরকারিভাবে কোনো সহায়তা না মেলার অভিযোগও করেন তাঁরা।

ভাষা শহীদ আবুল বরকতের ভাতিজা আইন উদ্দিন বরকত আক্ষেপ করে বলেন, যারা ভাষার জন্য শহীদ হলেন, তাঁদের পরিবারের কোনো সদস্যকেই বাংলা একাডেমিতে একুশে বইমেলার কোনো অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেওয়া হয় না। রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিশেষ দিনগুলোয় (বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস ইত্যাদি) বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাদের কুশল বিনিময়ের ব্যবস্থা করা হলেও ভাষাশহীদ পরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না। ২১ ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রীয়ভাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দেয়ার অনুষ্ঠানেও তাদের কোনো আমন্ত্রণ জানানো হয় না।

ভাষা শহীদ আবুল বরকতের পরিবারের সদস্যগণ

“আমাদের সাথে কেউ যোগাযোগ করে না। আমি যোগাযোগ করলে তারা নানান রকম কাগজপত্র চায়। আমার ভাই ভাতার বিষয়গুলো নিয়ে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করত। সে মারা গেছে। তারপর আমি একা হয়ে গেছি। আমার স্বামী অসুস্থ, এগুলো নিয়ে দৌড়াদৌড়ি অথবা এগুলোর পিছনে সময় দেওয়ার এখন আর আমার কোন সময় নেই। সেজন্য আমরা নিরবে চুপচাপ হয়ে গেছি। এখন আর ভাষা শহীদদের পরিচয় দিয়ে কোথাও আলোচনা করি না। কোথাও ওঠাবসাও করি না। আমরা নীরবে চুপচাপ হয়ে গেছি।”

বুক ভরা অভিমান নিয়ে এভাবেই নিজের ভাষায় মনের কথাগুলো বলছিলেন, ভাষা শহীদ শফিউর রহমানের মেয়ে শারমিন আদিবা রহমান।

অভিমানে তাঁর কণ্ঠ রোধ হয়ে আসে। তিনি বলতে থাকেন, “আমি চাই না জনসমক্ষে যেতে। যেভাবে আছি সেভাবেই নীরবে থাকতে চাই। এত বছর হয়ে গেল, কেউ যখন ভাষা শহীদ শফিউরের পরিবারের খোঁজখবর কেউ নেয়নি। এখন আর নেওয়ার দরকার নেই। এখন আর বিষয়গুলো সামনে আনতে চাই না। যেখানে আছি সেখানেই শেষ করেন।”

---

ভাষা শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে তাঁদের এমনি মনোভাব পাওয়া যায়। তাঁরা ভাষা শহীদ পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের মতো সকল ভাষা শহীদদের বংশধরদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও চাকুরিতে কোটা রাখার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের জন্য যেমন অবদান রয়েছে, দেশে বাংলাভাষা প্রতিষ্ঠায় ভাষা শহীদদেরও তেমন অবদান রয়েছে। তাঁরা বলেন, প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে ঘটা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো, গ্রন্থমেলা, সভা-সেমিনার সব কিছুরই আয়োজন করা হয়। কিন্তু এসব অনুষ্ঠানে উপেক্ষিত ভাষাশহীদদের পরিবার। ফেব্রুয়ারি মাস এলেই তাদের খোঁজ নেন সবাই। অন্য সময় আর কেউ তাদের খোঁজ রাখেন না।

---

ইতিহাস থেকে জানা যায়, সেদিন ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি চালায় পুলিশ। তখন বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকা ছিল উত্তাল। ১৯৫২ সাল ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের সামনে আমতলায় সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মী পরিষদের ডাকে সমাবেশে চলছিল। পাকিস্তান সরকারের জারি করা ১৪৪ ধারা ভেঙে ছাত্র-জনতার শ্লোগানে কেঁপে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এসময় রফিক উদ্দিন আহমেদের মাথায় লাগলে তার মাথার খুলি উড়ে যায়। সাথে সাথে তাঁর মৃত্যু হয়। ভাষা আন্দোলনে তিনিই প্রথম শহীদ। তলপেটে গুলিবিদ্ধ হন আবুল বরকত। এসময় আব্দুল জব্বার মেডিকেল চত্বরে গুলীবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এইসব ভাষা সংগ্রামী। এছাড়া আব্দুস সালাম গুলীবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি শহীদ হন। আর শফিউর রহমান ২২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষার মিছিলে যোগ দিলে পিছন দিক থেকে গুলিবিদ্ধ হন। পরে একই দিন তিনি শাহাদত বরণ করেন। কিন্তু মোট কতজন শহীদ হন তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। কারন অনেক শহীদের লাশ মর্গ হতে মিলিটারী ও পুলিশ গুম করে ফেলে।

---

২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার অধিকার আদায়ে বাঙালি শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী লেখেন, আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি-আমি কি ভূলিতে পারি?

এ প্রশ্নেরই প্রতিফলন ভেসে ওঠে আরেক ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বারের পুত্রবধূ ফিরোজা খাতুনের কন্ঠে। তিনি অভিযোগ ও আক্ষেপ করে বলেন, “আমরা যে শহীদ পরিবার এই কথা মানুষ এখন আর মনে রাখে না। কেউ আমাদের নিয়ে ভাবেও না। আমরা কোথাও পরিচয় দিতে পারি না। আমাদের কোথাও কোন সম্মান নাই।”

ফিরোজা খাতুন বলেন,আব্দুল জব্বার ১৯১৯ সালের ১০ অক্টোবর ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাঁচুয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে নিজ গ্রামের নামকরণ করা হয় জব্বার নগর। গড়ে তোলা হয় ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। কিন্তু সেখানে নগরের উন্নয়নের কোন ছোঁয়া নেই। সেখানে একটি উচ্চ বিদ্যালয় এবং একটি কলেজ জব্বারের নামে করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, আমার স্বামী (জব্বারের ছেলে) নিজেও একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি ভাষা শহীদের ভাতা বাবদ ১০ হাজার টাকা পেতেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পেতেন। ২০২১ সালে আমার স্বামীর মৃত্যুর পর ভাষা শহীদের ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। ২০২১ সালের ভাতা এলেও সে ভাতা টাকা আমরা তুলতে পারিনি। সে টাকা ফেরত যায়। তারপর থেকে ভাষা শহীদের ভাতা বন্ধ রয়েছে।

ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বারের পুত্র বধূ ফিরোজা খাতুন

তিনি বলেন, আমার দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। ছেলে ফাগুন ইসলাম বিজয় (২৮) মানসিক ভারসাম্যহীন। বড় মেয়ে লুৎফুন নাহার শোভা মাস্টার্স পাশ করার পর পিতার মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেয়েছে। কিন্তু ভাষা শহীদের পরিবারের সদস্য হিসেবে সে কোন স্বীকৃতি পায়নি। ছোট মেয়ে আফরোজা খানম রোভা স্নাতক পাস করেছে।

তিনি আবেক আপ্লুত হয়ে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজধানীর তেজগাঁও তেজকুনিপাড়া এলাকায় সাড়ে তিন কাঠা জমি বরাদ্দ দিয়ে সেখানে টিনের ঘর করে দিয়েছিলেন। সেখানে থাকতে হচ্ছে বস্তির মতন। আমার অসুস্থ ছেলেটাকে নিয়ে চলা খুব কষ্ট। ইনকাম নাই কিছু নাই। আমি নিজেও অনেক অসুস্থ। নিজেরই চিকিৎসা করতে পারছি না। আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। খুব মানবতার জীবন যাপন করছি। পাঁচ ভাষা শহীদদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আমরা একদম নিঃস্ব, অসহায়।

ধরা গলায় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের জায়গা দিয়েছে, আমার ছেলেকে নিয়ে এখানে বাড়ি করা সম্ভব নয়। তাই সরকার যদি আমাদের একটি বাড়ি নির্মাণ করে দেয়, আর ভাতাটা যদি আমার ছেলে উত্তোলন করতে পারে, তাহলে আমরা একটু সম্মানজনকভাবে জীবন যাপন করতে পারব।

কথা বলতে বলতে তাঁর কণ্ঠ নরম হয়ে আসে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে সাড়ে তিন কাঠা জমি দিয়েছিলেন। এজন্য আমি বঙ্গবন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞ। জীবনের শেষ সময় এসে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার কাছে আমার আবেদন, ভাষা শহীদ পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেন আমার এই জায়গার উপর একটি ঘর করে দেন। আমার ও সন্তানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন।

---

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেককে অনেক কিছু করে দিয়েছেন। তাই তিনি দয়ার দৃষ্টিতে ভাষা শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য যদি কিছু করে দেন, তাহলে আমরা তার নিকট কৃতজ্ঞ থাকব। তিনি দিতেই পারেন। প্রধানমন্ত্রী চাইলে আমাদের জন্য অনেক কিছু করতে পারেন। তিনি মাঝেমধ্যে আমাদের ডেকে কথা বলতে পারেন। আমাদের খোঁজখবর নিতে পারেন। ভাতার পরিমাণ একটু বাড়িয়ে দিলে হাত খরচটা হয়। সব ভাষা শহীদ পরিবারের সদস্যরা সবকিছু চাচ্ছে না। পাঁচ ভাষা শহীদদের মধ্যে কয়েকটি শহীদ পরিবার খুব অসহায় অবস্থায় রয়েছে।

তিনি বলেন, ছেলেকে নিয়ে এখন আমি খুব অসহায় অবস্থায় আছি। জীবন বেঁচে থাকার জন্য সরকারের কাছে এখন আমার কিছু দাবি করতেই হয়। সরকার আমাদের দিকে সুনজর না দিলে আমাদের জীবন ধারণ করা সম্ভব নয়। আমি অসুস্থ অবস্থাতেই মারা যাব। আমি চিকিৎসাও করতে পারি না। আমি ৯ মাস যাবত অসুস্থ।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ভাষা শহীদ শফিউর রহমান ১৯১৮ সালের ২৪ জানুয়ারী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোন্নগরে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মাহবুবুর রহমান ঢাকায় চাকরি করতেন। তিনি ১৯৪৫ সালের ২৮ মে কলকাতার তমিজউদ্দিনের কন্যা আকিলা খাতুনকে বিবাহ করেন। শফিউর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে যখন মারা যান, তখন তার মেয়ের বয়স মাত্র তিন বছর। মেয়েকে তিনি অত্যন্ত স্নেহ করতেন। আহত অবস্থায় তিনি তাঁর ডাক্তার ভাইকে বলেন,আমার মেয়েকে দেখো। আমি বুঝতে পারছি আমি তার কাছে আর ফিরে যেতে পারব না। ছেলে শফিকুর রহমান তখন মায়ের পেটে। ১৯৫২ সালের মে মাসে সে জন্ম গ্রহণ করে।

অভিমান ও দুংখবোধ নিয়ে ভাষা শহীদ শফিউর রহমানের অনেক আদরের মেয়ে শারমিন আদিবা রহমান বলেন, আমার ভাই শফিকুর রহমান ২০১৩ সালে ও আমার মা আকিলা খাতুন ২০১৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৪ সালের পর থেকে আমাদের সাথে কেউ আর যোগাযোগ করে না। তার আগে মাঝেমধ্যে চিঠি আসতো। অমুখ জায়গায় এটা আছে লোক পাঠান অথবা এসে নিয়ে যান। চিঠিতে বলা হত, আপনি ভাষা শহীদ শফিউরের আত্মীয় এর স্বপক্ষে কি প্রমাণ আছে, সেগুলো দিয়ে দাওয়াত পত্র অথবা অন্যান্য বিষয় এগুলো নিয়ে যান। তিনি একটু বেদনাহত কন্ঠে বলেন, এগুলি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে আমাদের বলা হতো।

তিনি বলেন, আমার একটি ছেলে ছিল। সে হার্ট এটাকে মৃত্যুবরণ করেছে। আমার সাথে আমার ভাইয়ের একমাত্র মেয়ে বসবাস করছে। বর্তমানে আমি, আমার স্বামী ও ভাইয়ের মেয়ে আমরা তিনজন একসাথে বসবাস করছি।

তিনি বলেন, ভাষা শহীদ পরিবারের সদস্য হিসেবে আমরা এখন আর কোন কিছুই পাচ্ছি না। আমাদের সাথে সরকারের অথবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনরকম যোগাযোগ করা হচ্ছে না।

---

ভাষা শহীদ আব্দুস সালামের ভাই আব্দুল করিম জানান, ভাষা শহীদ আবদুস সালাম ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর ফেনী জেলার দাগনভুইয়া উপজেলার সালামনগর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। সালামের নামে মানিকগঞ্জে একটি পাঠাগার ও একটি স্কুল স্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়ে থাকে। সালামের নামে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক ও সালাম নগর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তিনি অন্যান্য শহীদদের স্বজনদেন অনুরূপ দাবী জানান।

ভাষা শহীদ বরকতের ভাতিজা আইন উদ্দিন বরকত বলেন, ভাতার টাকাটাই মূখ্য নয়। তাদের দরকার এখন ভাষা শহীদদের পরিপূর্ণ স্বীকৃতি ও মর্যাদা। ভাষা শহীদদের পাচটি পরিবারকে কোন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান এমনকি একুশের বই মেলায়ও আমন্ত্রণ জানানো হয় না। তাই রাষ্টীয় মর্যাদা প্রত্যাশা তাদের।

ভাষা শহীদ বরকতের নাতনী রাইসা জাহান বরকত বলেন, মুক্তিযোদ্ধার বংশধরদের মতো ভাষা শহীদের বংশধরদেরও উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি ও সরকারি চাকুরিতে কোটা রাখার দাবি জানিয়েছেন।

ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিনের ভাই খোরশেদ আলম জানান, রফিক উদ্দিন ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের পারিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকায় থেকে জগন্নাথ কলেজে পড়ালেখার পাশাপাশি পিতার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। গ্রামে রাহেলা খাতুনের সাথে রফিকের প্রেমের সম্পর্ক থাকায় পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে ঠিক করা হয়। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি রফিকের বিয়ের বাজার নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফেরার কথা। কিন্তু সবভূলে রফিক ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার দাবীতে মিছিলে যোগ দিয়ে শহীদ হন।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের মতন তাদের জন্যও কোটা ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাদের দাওয়াত দিয়ে বা নানাভাবে আমাদের সম্মানিত করা যেত।

৫২‘র ভাষা আন্দোলন বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। যা পরবর্তীতে স্বাধীকার আন্দোলনকে আরো বেগবান করে। দিনটিকে ১৯৯৯ সালে আস্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘ।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon