গণবাণী ডট কম:
গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন দেশীপাড়া এলাকায় বন্ধুর ছোট বোনের প্রেমে পড়েছিল রিফাত। বিষয়টি না জেনেই একই মেয়ের প্রেমে পড়ে অপর বন্ধু অটো চালক জাহিদ। একারণে জাহিদকে গলা কেটে খুন করে অটো ছিনতাই করা হয়।
ঘটনার ১১ দিনের মাথায় পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় রিফাত ও তার সহযোগী নাজমুলকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে জাহিদ হত্যার রহস্য। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যার ব্যবহৃত ছুরি ও জাহিদের মোবাইল সেট।
নিহতের নাম জাহিদ (১৭)। তিনি সাতক্ষীরা জেলার সদর থানাধীন কুচপুকুর বাবুলিয়া এলাকার হযরত আলীর ছেলে। তার পিতা গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন পশ্চিম চান্দনা এলাকার আবুল মাস্টারের বাড়ীর ভাড়াটিয়া।
গ্রেফতার আসামীরা হলো, মো: রিফাত ওরফে ডিজে রিফাত (২১)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন বিলাসপুর এলাকার মৃত আকরাম হোসেনের ছেলে। অপর জন মো: নাজমুল হাসান ওরফে কাটিং (২১)। তিনি গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন নরুন এলাকার মো: ফজল ভান্ডারীর
বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) আবু তোরাব মো: সামসুর রহমান।
তিনি আরো জানান,গত ৪ মার্চ সন্ধ্যায় বাসা থেকে অটোরিক্স নিয়ে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেনি জাহিদ। পরে তার স্বজনেরা জিএমপির বাসন থানায় নিখোঁজ ডায়েরী করেন। পরের দিন ৫ মার্চ সকালে জিএমপি সদর থানাধীন পুর্ব দেশীপাড়া সাকিনস্থ বিমানের টেকের মেহগনি বাগানের পশ্চিম পাশের অজ্ঞাতনামা যুবকের গলাকাটা মরদেহ পাওয়া যায়। পরে মরদেহ শনাক্তের জন্য বেতার বার্তা পাঠানো বাসন থানা থেকে নিখোঁজের জিডি বিষয়ে জানানো হয়। পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে জাহিদের স্বজনেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করে। এ ঘটনায় জাহিদের পিতা হযরত আলী বাদী হয়ে সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
তিনি আরো জানান, মামলা দায়েরের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই উৎপল কুমার ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) জনাব রেজওয়ান আহমেদের নেতৃত্বে ৬ দিন ধরে তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ ও তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় যে,সন্ধিগ্ধ আসামী মো: আল-আমিন হোসেনের ছোট বোনের সাথে জাহিদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে জাহিদ জানতে পারে তার বন্ধু রিফাতও ঐ মেয়েকে ভালোবাসে। এনিয়ে রিফাতের সাথে শত্রুতা তৈরী হয়। রিফাত সুযোগ খুজতে থাকে। ঘটনার দিন রিফাত ও নাজমুলসহ অন্যান্যরা জাহিদের অটোরিক্সা ভাড়া নিয়ে জয়দেবপুর ও চৌরাস্তা এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। রাত ১১টার দিকে রিফাত পূর্ব শত্রুতার জে হিসাবে সহযোগীদের নিয়ে জাহিদকে তারই পরিহিত শার্ট দিয়ে হাত বেধে জবাই করে হত্যা করে এবং অটোরিক্সা ও সাথে থাকা মোবাইলসহ অন্যান্য জিনিস নিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি জানান, ওই মেয়ের বড় ভাই আল আমিনের বিরুদ্ধে থানায় ৮টি ছিনতাই ও ডাকাতির মামলা রয়েছে। এ হত্যার ঘটনায় প্রথমে আল আমিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তার দেওয়া প্রেম সংক্রান্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রিফাত বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ও অন্যান্য সহযোগীদের নাম প্রকাশ করে। পরবর্তীতে রিফাতকে নিয়ে অপর আসামী নাজমুল ওরফে কাটিং নাজমুলকে সদর থানার মারিয়ালী এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়। তখন তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নাজমুল এর ভাড়া বাসা হতে লুণ্ঠিত অটোরিক্সায় ব্যবহৃত সাউন্ড বক্স, নিহতের সাথে থাকা ব্লুটুথ এয়ারবাড, রক্তমাখা শার্ট, রক্তমাখা সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়।
জিএমপি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম জানান, গ্রেফতার আসামীদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।