গণবাণী ডট কম:
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ওয়ালটন কারখানায় রোববার সন্ধ্যায় ইফতার খেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা রাত ৮টা থেকে আব্দুল্লাহপর-চন্দ্রা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় ওয়ালটন কারখানার ক্যান্টিনে রোববার ইফতারের ৪ জন শ্রমিক শরবত খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদের গাজীপুর মহানগরীর বারইপাড়া এলাকায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ জনের মৃত্য হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদে আব্দুল্লাহপর-চন্দ্রা সড়কের অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে আব্দুল্লাহপর-চন্দ্রা সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে বারইপাড়া থেকে কালিয়াকৈরর চন্দ্রা পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) আবু তোরাব মোঃ শামসুর রহমান জানান, ইফতারের সময় ওয়ালটনের ক্যান্টিনে ইফতারের সাথে ট্যাং শরবত খেয়ে কয়েকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদেরকে ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে কেপিজে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। অপর একজন অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছে। এ ঘটনায় পুলিশ সড়কের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারী শ্রমিকরা হলো, সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালি থানার কুরকি মধ্যপাড়া গ্রামের বুদ্ধু মিয়ার ছেলে শেখ ফরিদ হোসেন (৩০),টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুর থানার বাগবাড়ী গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে আব্দুল বারেক (৪৮) ও টাংগাইল জেলার সদর থানার গোসাইর জুয়ার গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে অপরজন আশরাফ আলী (৩০)। তারা ওয়ালটন কারখানার পাওডার কোটিং শাখার শ্রমিক ছিলেন।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো: সানোয়ার হোসেন জানান, শ্রমিক মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশ কাজ করছে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান,রোববার ইফতারের সময় কালিয়াকৈর থানাধীন চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানায় ইফতার খেয়ে কয়েক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে অসুস্থ শ্রমিকদের কাশিমপুর এলাকার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। সেখানে ৩ শ্রমিক মারা গেছেন।
এ বিষয়ে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) হুমায়ূন কবির বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন সব কর্মীকে ইফতার সরবরাহ করি। কয়েকজন ইফতার করার পর বাইরে থেকে এক ধরনের কোমল পানীয় কিনে খায়। এরপরই তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের আমাদের মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজন মারা যান।’
হুমায়ূন কবির আরও বলেন, ‘ওই কর্মীরা বাইরে থেকে কেনা কী খেয়েছেন সেটির নমুনা আমরা সংগ্রহ করেছি। এই ঘটনায় এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানো হবে।’